Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পটুয়াখালীতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আমন ফলনের আশা

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:৪৭ PM
আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:৫০ PM

bdmorning Image Preview


বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে গাঢ় সবুজের সমারোহ। দৃষ্টিসীমা ছাপিয়ে চারদিকে বিরাজ করছে অপার সবুজের দুলুনি। কৃষকের নিরন্তর পরিচর্চায় তরতর করে বেড়ে উঠছে এ সবুজের মাঠ। দিন যতই যাচ্ছে সেই সংগে বাড়ছে পরিচর্যার ধরণ। আর এ সবুজের শীষের দোলায় লুকিয়ে আছে হাজারো কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। কারন কিছুদিন পড়েই এসব সবুজ মাঠ হাসবে সোনালী ধানের হাসিতে। 

উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর হাজারো কৃষক পরিবারের চোখে মুখে এখন সোনালী স্বপ্ন পূরনের প্রত্যাশা। স্বপ্নের ফসল ঘরে তোলার সময় আসায় প্রতিটি কৃষক পরিবারে বইছে নবান্ন উৎসবের প্রস্ততি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোন বিপর্যয় না ঘটলে কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনা ভড়ে উঠবে সোনালী ধানের হাসিতে। এমন আশায় দিন গুনছেন এখন কৃষক। 

সরজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেতের আগাছা দমন, পোকা দমনসহ অন্যান্য পরিচর্যায় কৃষকেরা রয়েছেন ব্যস্ত। আবার অনেকে অধিক ধান পাওয়ার আশায় জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করছে। ক্ষেতের মধ্যে পোতা বাঁশের কঁঞ্চি ও গাছের ডালের উপর ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসে আছে। সুযোগ বুঝে ধানক্ষেতে থাকা ক্ষতিকর পোকা ওইসব পাখিরা খেয়ে ফেলছে। বিগত বছরে উৎপাদিত ধানের ভাল দাম পাওয়ায় অনেকটা আনন্দ নিয়েই কষ্টকর এ কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। 

একাধিক কৃষক জানান, কিছুদিন পরই তারা স্বপ্নের সোনালী ধান কাটা শুরু কবে। তবে কিছু কিছু ক্ষেতে আমন ধানে বাদামি ফড়িং পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। আবার কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে ইদুরের উপদ্রব। সব মিলিয়ে বাম্পার ফলন ঘরে তোলায় কৃষকের রঙিন স্বপ্ন এখন বিভোর হয়ে আছে। কারও কাছে দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

ধানখালী ইউনিয়নের কৃষক রাসেল শিকদার বলেন, ২৪ শতাংশ জমিতে আমন চাষ করেছে। খুব ভাল ফসল হয়েছে। মিঠাগজ্ঞ ইউনিয়নের নিহার মিত্র জানান, এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। তবে ধানের কাঙ্খিত দাম পেলে সব কস্ট ভুলে যাবেন। আর তখন নবান্নের প্রকৃত আনন্দ পাবেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, এবছর জেলায় ২লাখ ১০হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫ লাখ ৮ হাজার ৫শ মেট্রিক টন। জেলার টি ইউনিয়নে প্রায় ৩৪ হাজার ৫শ' হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে।

মৌসুম শুরুতে এবং মধ্য ভাগে টানা বর্ষণে রোপা আমনের বীজতলা ও ক্ষেত তলিয়ে গেলেও পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় তেমন কোন ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। এ বছর জেলায় উচ্চ ফলনশীল স্বর্ণা, দেশি উচ্চ ফলনশীল ব্রি-৪৯, বিনা-৭সহ মোটা ও চিকন জাতের ধানের চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই ও পোকার আক্রমন না থাকায় চলতি বছর জেলায় রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি ফলন হবে এমন আশা কৃষকদের। কৃষক নবান্নের আনন্দে ধান ক্ষেতে কাঁচি দিবেন।  

কলাপাড়া ও রাংগাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আ.মন্নান জানান, চলতি বছরের প্রকৃতি আমন চাষের অনুকূলে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষেতে রোগ-বালাইয়ের খুব একটা প্রকোপ নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন আসবে। 
 

Bootstrap Image Preview