Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তালায় শামুক কুড়িয়ে সংসার চলে যাদের

এসএম বাচ্চু, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:২২ PM
আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:২৪ PM

bdmorning Image Preview


প্রকৃতি ও কৃষির জন্য এসব শামুক উপকারী হলেও সে সম্পর্কে জানেন না তারা। বেচেঁ থাকার জন্যই শামুক কুড়িয়ে সংসার চলে এসব পরিবারের। তাই বিভিন্ন বিল-ঝিল আর খাল থেকে শামুক কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।

প্রায় কারোরই নেই নিজস্ব জমি-জমা। কারো আছে শুধু ভিটেমাটি। বছরের ধান ও গম মৌসুমে পরের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। তবে বর্ষা আর শীতের শুরু পর্যন্ত এদের হাতে থাকে না তেমন কোনো কাজ।তালা উপজেলার সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা তারা।

উপজেলার বিলে শামুক কুড়ানী মানুষের দেখা মিললেও এদের অধিকাংশের সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বসবাস পাড়ায়। এসব গ্রামের বিল ও ঝিল সংলগ্ন নিচু জমিতে বর্ষাকালে বিশালাকার ধারণ করে। তখন পানিতে ভেসে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে এসব এলাকার উপজাতীয়রা শামুক কুড়িয়ে বছরের নির্দিষ্ট একটা সময় সংসারের খরচা চালায়। এসব বিল-ঝিল ও খালে বর্ষার পানি নামতে শুরু করলেই দেখা মেলে প্রচুর শামুকের। শীতের শুরু পর্যন্ত শামুকের প্রাচুর্য থাকে।

শামুক কুড়ানীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, নিজেদের জমি-জমা না থাকায় প্রায় সারা বছরই তারা পরের জমিতে কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু বর্ষাকাল থেকে শীতের শুরু পর্যন্ত তেমন কৃষিকাজ না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খান তারা। তাই বর্ষার শেষ থেকে শীতের শুরু পর্যন্ত আশপাশের খাল-বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করেন তারা। এ কাজে তাদের পরিবারের নারী ও শিশুরা অংশ নেয়।

তারা জানান, উপজেলার বিভিন্ন পল্লীতে শামুকের বেশ চাহিদা। বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করা হলে এসব শামুক বস্তাবন্দী করে বিভিন্ন গ্রামে তারা বিক্রি করেন। তবে এজন্য তাদের তেমন কষ্ট করতে হয়না। শামুক কুড়িয়ে বস্তা ভর্তি করা পর্যন্তই তাদের কাজ। এরপর পরিবারের অন্য সদস্যরা বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতারা নিয়ে গেলেই নির্দিষ্ট ক্রেতারা তা কিনে নেয়।

তালা সদরে ভ্যানচালক আজিুর হমানের স্ত্রী ও মোবারাকপুর গ্রামের তাছলিমা জানান,তাদের মৌসুমি ভিত্তিক কাজ এটা, তারা প্রতিদিন সকাল থেকে শুরো করে বিকাল পর্যন্ত যা শামুক হয় সেগুলা বিক্রয় করে সংসার চালান।

শামুকের বেশ চাহিদা থাকায় হতদরিদ্র এসব ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর নারী-পুরুষ বিলে গিয়ে শামুক সংগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। প্রতিদিন সাত-আট ঘণ্টা কাজ করে একজন এক  বস্তার মতো শামুক কুড়াতে পারেন। নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে তা কম হয়। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে দুই বস্তা পর্যন্ত শামুক পাওয়া যায়। বস্তা প্রতি শামুক ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়। তাদের অভিযোগ আমার গরীব মানুষ আমাদেরকে মহাজনরা সঠিক দাম দেই না তবে তার চড়া দামে বিক্রয় করে শামুক গুলো। কারণ এই শামুক হাঁস ও মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যাবহার করা হয়। ঘের ব্যাবসায়ীরা চড়া দামে তাদের কাছ থেকে শামুক ক্রয় করে। 

Bootstrap Image Preview