ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে পায়রা বন্দর ভিত্তিক দেশের প্রথম আরসিসি ফোর লেন সড়ক। এর সাথে আলোকিত হচ্ছে পায়রা বন্দর। উম্মোচিত হচ্ছে পায়রা বন্দর ভিত্তিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার। প্রায় ২৫৫ কোটি ব্যয়ে ৫ দশমিক ৬ কি.মি এ সড়কের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হচ্ছে চলতি বছরের ডিসেম্বরে। এমন লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই দিনরাত চলছে নির্মাণ কাজ। সড়কটি নির্মাণের ফলে পায়রা বন্দর থেকে নৌ-পথের পাশাপাশি সড়কপথেও পণ্য খালাসের পথ সুগম হচ্ছে।
দেশে বিদ্যমান বন্দরের পাশাপাশি আরেকটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের অংশ হিসাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার টিয়াখালী নদীর পাড়ে স্থাপিত হয় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর এর নির্মাণের কাজের শুভ উদ্বোধন করেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার আনুসঙ্গ সমাপ্ত করে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট পায়রা বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
দেশি অামদানীকারকদের আগ্রহেই নৌ-পথকে ব্যবহার করে শুরু হয় বন্দরের পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। একই সঙ্গে সড়ক পথ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তায় পায়রা বন্দর থেকে কুয়াকাটাগামী মহাসড়কের রজপাড়া পর্যন্ত চার লেনের সংযোগ সড়কের নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১লা জানুয়ারী শেখ হাসিনা ফোর লেন সড়ক নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান।
বন্দর সূত্র জানায়, পাঁচ দশমিক ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২৪ মিটার প্রস্থ আধুনিক সুবিধা সংবলিত এ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে- ২৫৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাস্তাটি কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছে। সড়কটি নির্মাণ করতে অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৫৮ একর জমি। সড়কের উভয় পাশে বৃক্ষরোপন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্রিজ নির্মাণ, রাস্তা বিদ্যুতায়ন করা হচ্ছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামেই করা হয়েছে এ ফোর লেন সড়কের নামকরণ।
শেখ হাসিনা ফোর লেন সড়ক উদ্ভোধনের সময় নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন এবং পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে দেশের তৃতীয় পায়রা বন্দর। এই বন্দরের নামকরণও তিনি করেছেন। পায়রা শান্তির প্রতীক তাই বন্দরের নাম দিয়েছেন পায়রা বন্দর।
পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাতহানে উপকূলীয় এ জনপদে। বারবার এমন দুর্যোগের হানায় মানুষ হয়ে পড়েছিল বিপর্যস্ত। কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত মানুষ আর্থিক দিক দিয়ে হয়ে পড়েছিল পঙ্গু। ব্যবসা বানিজ্যে নেমে পড়েছিল স্থবিরতা। এক সময়ের শস্য ভান্ডার খ্যাত এ জনপদ হয়ে পড়েছিল অবহেলিত। ঠিক সে সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করেন।
তিনি আরো বলেন, নৌ-পথের পাশাপাশি সড়ক পথে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া শুরু হলে আরো বেগবান হবে পায়রা বন্দরের কার্যক্রম। পায়রা বন্দরকে ঘিরে দেশের উন্নয়নের যে স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী দেখছেন তা পরিপূর্ণ হবে।