বাড়ির মালিকের ছেলের অপকর্মে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে প্রতিবন্ধী (১৪) কাজের মেয়ে। প্রতিবন্ধী মেয়েটি বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানালে টাকা দিয়ে এ ঘটনার সমাধান করতে চেয়েছেন অভিযুক্ত ছেলের মা।
নেত্রকোনার মদন উপজেলার চন্দ্রতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। মামলাটি নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটির মা বলেন, মোহনগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামের ফারুক মিয়ার বাড়িতে মেয়েকে কাজ করতে দেই। সেখানে ৫ বছর কাজ করার পর কয়েক মাস আগে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে কেন্দুয়া উপজেলার আব্দুস সালামের মেয়ে শিক্ষিকা দিপা আক্তারের বাসায় কাজ করতে দেই। কয়েকদিন আগে দিপার বাড়িতে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বাসার মালিক আব্দুস সালাম মেয়েটিকে কেন্দুয়া মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানান মেয়েটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এরপর মেয়েকে গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসি। আমার মেয়ে জানিয়েছে আগের বাসার মালিক ফারুকের ছেলে রিজন মিয়া এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে বাড়ির মালিক ফারুক মিয়াকে বিষয়টি জানালে ছেলের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে আমাদের টাকা দিতে চায় তার স্ত্রী।
নির্যাতিত মেয়েটি জানায়, ফারুক মিয়ার বাসায় কাজ করার সময় আমাকে প্রায় রাতে তার রুমে নিয়ে কুকর্ম করত রিজন। আমার পেটে রিজনের সন্তান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছেলের মা হেনা আক্তার বলেন, গরিব মেয়েটিকে আদর-যত্নে লালন-পালন করেছি। কয়েক মাস আগে বেতন নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যায় তার মা। ৮ মাস পর মোবাইল ফোনে আমাদের জানায় তার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। আমার ছোট ছেলে রিজনকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করছে তারা। এটি ষড়যন্ত্র। বিষয়টি শোনার পর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিছু টাকা দিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা এখন টাকার বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রচার করছে।
এ মামলার আইনজীবী হায়দার মিয়া বলেন, নির্যাতিত মেয়েটির মায়ের মামলাটি নথিভুক্ত করতে মোহনগঞ্জ থানায় পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সেখানে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
মোহনগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. শওকত আলী জানান, আদালত থেকে অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটির মামলার আদেশ সংক্রান্ত কাগজপত্র এখন পর্যন্ত থানায় পৌঁছেনি। কাগজপত্র থানায় এলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।