Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাবার খুনিদের আড়াল করতে ছেলেকে ফাঁসানোর অভিযোগ

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৪৯ PM
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


বাবার হত্যা মামলার আসামিদের আড়াল করতে ছেলেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ করেছেন মা আমেনা বেগম।

সোমবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আমেনা বেগম এ কথা জানান।

তিনি বলেন, স্বামী আ. মন্নান গাজী হত্যা মামলার আসামিদের যোগসাজসে ডিবি পুলিশের একটি দল ষড়যন্ত্রমূলক ইয়াবার নাটক সাজিয়ে তার ছেলে অপু গাজি (২০) কে ৩'শ পিচ ইয়াবা দিয়ে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। যার মামলা নং ৫০৪/১৮।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ছোট ছেলে আকাশ, শশুর আ. খালেক গাজী, দেবর আসাদুল গাজী ও মটর সাইকেল চালক আবুল হোসেন ও রুবেল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অপু গাজীর মা আমেনা বেগম বলেন, স্বামী মন্নান গাজী হত্যার পর দুই ছেলে ছেলে অপু গাজী (২০) ও আকাশ (৮) কে নিয়ে অসহায় অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন তিনি। এমতাবস্থায় তার একমাত্র উর্পাজনক্ষম পুত্র অপু গাজী আলীপুর কলেজ রোডে পেট্রোলের দোকান দিয়ে সংসার পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু আসামিরা তাও সহ্য করতে পারেনি। আসামিরা ষড়যন্ত্র করে গত ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমার ছেলের দোকানের নিচে পলিথিনে মোড়ানো ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে ডিবি পুলিশে খবর দেয়।

আসামিদের কথিত মতে, ডিবি পুলিশ দোকানের নিচ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে অপু গাজীকে গ্রেফতার করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ১৫-২০জন মোটরসাইকেল চালকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। ডিবি পুলিশ অপু গাজীর দোকান ও দেহ তল্লাশি করে কোন ইয়াবা না পেলেও মামলার এজাহারে অপুর প্যান্টের ভেতর থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক। অথচ মোটরসাইকেল স্ট্যান্ডে সকলের সামনে দোকানের নিচ থেকে কথিত ইয়াবা উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। ডিবি পুলিশের এমন সাজানো ঘটনায় তিনি ও তার পরিবার হতবাক হয়ে গেছেন। 

আমেনা বেগম কান্না জরিত কন্ঠে অভিযোগ করেন, স্বামী হত্যা মামলার আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পটুয়াখালী ডিবি পুলিশের এসআই জাকির হোসেন, এএসআই মনির হোসেন, এএসআই সুরেশ মন্ডল, কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান, আবু ছালেক ইয়াবার নাটক সাজিয়েছেন। এসময় উপস্থিত মোটরসাইকেল চালকরা এ ঘটনার স্বাক্ষী হতে না চাইলেও তাদেরকে মারধর করে স্বাক্ষী বানানো হয়েছে। উপস্থিত মটরসাইকেল চালকরা ডিবি পুলিশের মারধরের ভয়ে এর প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। এজাহারে ঘটনার সময় কনস্টেবল মোক্তার হোসেন উপস্থিত ছিল উল্লেখ করা হলেও তখন তিনি ছুটিতে ছিলেন। ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে আইনের আওতায় আনাসহ তার নির্দোষ ছেলের মুক্তি দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অপু গাজীর চাচা আসাদুল গাজী বলেন, তার ভাই মন্নান গাজীকে ২০১৬ সালের ২৪ ফ্রেরুয়ারী নির্মমভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ হত্যার ঘটনায় তার বাবা আব্দুল খালেক গাজী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পুলিশ ৩ আসামির নাম বাদ দিয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ প্রতিবেদনে না রাজি দিলে আদালত তা গ্রহণ করেন।

তিনি দাবি করেন, হত্যা মামলা তুলে নিতে এবং টাকা পয়সা দিয়ে মিমাংসা করার জন্য আসামি পক্ষ বার বার হুমকি ও চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। আসামিরা বেশির ভাগই ইয়াবা সেবন এবং ব্যবসার সাথে জড়িত। এদের একজনের বিরুদ্ধে একাধিক ইয়াবা মামলাও রয়েছে। আসামিরা হত্যা মামলা তুলে নিতে হুমকি ধামকিতে ব্যর্থ হয়ে ডিবি পুলিশের যোগসাজসে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দিয়ে অপু গাজীকে ফাঁসিয়েছে।

অপুর দাদা খালেক গাজী বলেন, বর্তমানে সন্ত্রাসীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।

ইয়াবা উদ্ধারের সময় উপস্থিত মোটরসাইকেল চালক রুবেল ও আবুল হোসেন বলেন, অপু গাজীর দোকান ও শরীর তল্লাশি করে ইয়াবা পায় নি। ডিবি পুলিশের এক সদস্য দোকানের নীচ থেকে ইয়াবা পেয়েছে বলে তখন তাদেরকে জানান। আমরা দু'জন ছাড়াও ঘটনাস্থলে আরো ১৫-২০জন মোটরসাইকেল চালকরা উপস্থিত ছিলাম।

ইয়াবা উদ্ধার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পটুৃয়াখালী জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রাথমিক তদন্তে অপু গাজী ইয়াবা ব্যবসায়ী না তা তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। তবে অপু ইয়াবা সেবন করে তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছেন। ষড়যন্ত্র হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা যাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।  

Bootstrap Image Preview