Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সুন্দরীদের দিয়ে ফেসবুকে ভয়ঙ্কর ফাঁদ পাতার তথ্য জানালেন কলেজছাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:১০ PM
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:১০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সুন্দরী তরুণীদের দিয়ে ফেসবুকে ভয়ঙ্কর ফাঁদ পাততেন একটি চক্র। ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে ভিন্ন কৌশলের এই চক্রটির সন্ধান পাওয়া গেছে। চক্রে জড়িত করা হয়েছিল কলেজপড়ুয়া এক তরুণীকে। শেষ পর্যন্ত চক্র থেকে বের হয়েছেন এই তরুণী। তিনি জানিয়েছেন সুন্দরী তরুণীদের দিয়ে ফেসবুকে ভয়ঙ্কর ফাঁদ পাতার চাঞ্চল্যকর তথ্য।

জানা যায়, সুন্দরী দেখতে তরুণীদের নানা অ্যাঙ্গেলের ছবি ফেসবুকে দেওয়া হতো । এরপর প্রতিদিনই রোমান্টিক একাধিক স্ট্যাটাস লিখে পোস্ট করেন। সুন্দরী তরুণীর ছবি দেখে সহজেই আকৃষ্ট হন অনেকে। এরপর চ্যাটিং, শুরু হয় বন্ধুত্ব। টাইম লাইনে যত রোমান্টিক চ্যাটে তার চেয়ে বেশি। রোমান্টিকতার সঙ্গে ব্যবহার করেন শারীরিক প্রসঙ্গ। আকর্ষণ করেন ভিন্ন জগতে। সরাসারি জানিয়ে দেন অর্থের বিনিময়ে সঙ্গী হন তিনি। এভাবেই শুরু। মূলত এটি একটি চক্র। নানা কৌশলে ফাঁদ পাতা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফাঁদে পা দিলে একটার পর একটা প্রলোভন। প্রলোভনে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়েছেন অনেকে।

এ ব্যাপারে ঐ তরুণী জানান, চক্রের মূল হোতা তার স্বামী তৌহিদুল ইসলাম আকাশ। ফেসবুকে আইডিতে নিজের স্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে ছদ্মনাম দেয় সে। স্বামীর কথায় বাধ্য হয়েই এই অপকর্মে লিপ্ত হন তিনি। তার ফোনে কল দিতো অচেনা পুরুষরা। কথা বলতো। দীর্ঘসময় কথা বলা ছাড়াও তারা ইমো, ভাইবারে ওই তরুণীকে দেখতে চাইতো। তরুণী ক্যামেরার সামনে যেতে সম্মত না হলে মারধর করা হতো। বাধ্য হয়েই স্বামীর কথায় ক্যামেরার সামনে বসতে হতো। ওপাশে থাকা পুরুষ লোকটির নানা কথার উত্তর দিতে হতো। অভিনয় করে হাসতে হতো।

তিনি জানান, আকর্ষণীয় একটা ভাব প্রকাশ করে ক্যামেরার সামনে বসতেন তিনি। শুরুতে কথা বলেই আয় করতেন।

তরুণী বলেন, প্রবাসীরা কথা বলার জন্য টাকা পাঠাতো। এক ঘণ্টা কথা বললে ১০০০ টাকা পাঠাতো। কথা বলার আগেই টাকা পাঠাতো। নিশ্চিত হওয়ার জন্য আগে ফোনে কল দিয়ে হাই-হ্যালো করতো। তারপর প্রবাসীদের প্রত্যাশা বেড়ে যেতো। ভিডিও কলে তরুণীকে দেখতে চাইতো তারা। তখন আরও রেট বাড়িয়ে দেয়া হতো। কিন্তু মূল কাহিনী ঘটতো সরাসরি। ফেসবুকের মাধ্যমে চ্যাট করে, ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হওয়ার পর সরাসরি ফূর্তি করতে আগ্রহীদের ডাকা হতো ধামরাইয়ের নির্জন স্থানে। উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে পুরুষ ব্যক্তি আসতো ঠিকানা অনুসারে। তাকে রিসিভ করতেন ওই তরুণী। এজন্য তাকে নানাভাবে সাজতে হতো। কখনো থ্রি-পিস, টু-পিস, কখনো জিন্সের প্যান্ট, টি-শার্ট বা গেঞ্জি পরতে হতো। নির্ধারিত স্থান থেকে রিসিভ করে পুরুষ ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হতো নির্দিষ্ট স্থানে।

সেখানে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা হতো চক্রের কয়েকজনকে। দেশীয় অস্ত্র, ক্যামেরা হাতে নিয়ে অপেক্ষা করতো তারা। স্বামী আকাশের কথানুসারে নেয়া হতো নির্জন ঘরে। নদীর ওপাড়ে একটি খামার বাড়িতে। ঘরে ঢোকা মাত্রই ঘটতো মূল ঘটনা। আকাশ ও তার সঙ্গীরা ওই ঘরে ঢুকে যুবককে আটক করতো। প্রথমে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ কেড়ে নিতো। মারধর করতো। তারা এটিএম কার্ড চাইতো। তা পেলে জেনে নিতো পিন নম্বর। এছাড়া বিভিন্ন বিকাশ নম্বরে টাকা আদায় করতো। এভাবে এক-একজনের কাছ থেকে ৩০ থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে চক্রটি।

তরুণী জানান, এই অপকর্মে কোনোভাবেই জড়িত হতে চাননি তিনি। এ নিয়ে আকাশ ও তার মধ্যে প্রায়ই কলহ হতো। কিন্তু পালিয়ে বিয়ে করেছেন। সংসার চলছিল না কিছুতেই। না খেয়েও থাকতে হয়েছে তাদের। তবু এভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে রাজি হননি। রাজি না হলে তাকে মারধর করা হয়। বাধ্য হয়েই আকাশের কথামতো কাজ করে যেতে হতো। ক্রমেই আকাশের অত্যাচার বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত অন্য পুরুষের শয্যাসঙ্গী হতেও প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হন তরুণী। তখনই আকাশ ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মারধর করা হয় তাকে। শেষ পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নিয়েছেন নির্যাতিতা।

সিটিটিসি’র সাইবার ইউনিটের উপ-কমিশনার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, সাইবার ক্রাইমের বেশিরভাগ অভিযোগই ব্যক্তিগত বিষয়। বিশেষ করে প্রেম-ভালোবাসা থেকে ব্ল্যাকমেইল কেন্দ্রিক। এ রকম অভিযোগ পেলে সাইবার ক্রাইম দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এদিকে বিষয়টি তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পলাতক রয়েছে আকাশসহ এই চক্রের সদস্যরা।

নির্বাচন পরিচালনায় দলমত নির্বিশেষে সব নাগরিকের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণের শুরুতেই তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার জন্য আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতির ওপর কিছুটা আলোকপাত করব। নির্বাচন পরিচালনায় সব নাগরিকের সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, যেসব বীর সন্তান স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়েছেন তাদের স্মরণ করছি। স্মরণ করছি ’৫২র ভাষা শহীদদের যাদের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মায়ের ভাষা; অর্জিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

কে এম নুরুল হুদা বলেন, আন্দোলন, আত্মদান আর সংগ্রামের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ভাষা আন্দোলনে আত্মদানের প্রত্যয় নিয়ে স্বাধিকার আন্দোলন। স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেরণায় মুক্তি সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ অর্জন লাল-সবুজ পতাকার এক খণ্ড বাংলাদেশ। চরম ক্ষুধা-দারিদ্র্য, অবণতকর আর্থ-সামাজিক অবস্থান এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত ভৌত অবকাঠামো নিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম। নবীন সে দেশটি আজ উন্নত বিশ্ব অভিমুখ অভিযানে দীপ্তপদে এগিয়ে চলছে।

তিনি বলেন, উন্নয়নের আর একটি আরোধ্য সোপান গণতন্ত্রের মজবুত ভিত্তি। সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থিতিশীল ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে সমান্তরাল পথ ধরে অগ্রসর হতে হবে। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় নির্বাচন একটি নির্ভরশীল বাহন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন তা এগিয়ে নিয়ে যেতে জনগণের কাছে হাজির হয়েছে। জনগণের হয়ে সব রাজনৈতিক দলকে সে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের গণতন্ত্রের ধারা এবং উন্নয়নের গতিকে সচল রাখার আহ্বান জানায়।

এর আগে, বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ ভাষণ দেয়ার কথা জানায় নির্বাচন কমিশন।

সিইসির ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করছে।

বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিওগুলো বাংলাদেশ টেলিভিশন হতে ফিড নিয়ে প্রচার করতে পারবে।

গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন।

এছাড়া, গত ১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চার কমিশনার।

এদিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা জানিয়েছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের বিষয়ে আগামী ৪ নভেম্বর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার জন্য তফসিল ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।

উল্লেখ্য সংবিধান অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর থেকে নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

Bootstrap Image Preview