জেলা প্রশাসক ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টে সমুদ্র সৈকত লাগোয়া সরদার মার্কেট এবং সানরাইজ মার্কেটের নামে চলছে ঘর তোলার হিড়িক। এসব অবৈধ স্থাপনা তোলার কারণে সৈকতে পর্যটকদের নামা ওঠা এবং অবাধ চলাচল করার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে এসব স্থাপনা তোলায় সৈকতের পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
সৈকতে এসব অবৈধ স্থাপনা তোলা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ায় লেখালেখির কারণে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলেও অবৈধ স্থাপনা তৈরির কাজ বন্ধ হয়নি।
যেমন খুশি তেমনভাবে তোলা হচ্ছে এসব অবৈধ স্থাপনা। জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে এবং সৈকতের জিরো পয়েন্ট লাগোয়া এসব ঘর তুলে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে সাদা বালিতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও সানরাইজ কর্তৃপক্ষ তার রেকর্ডীয় জমি দাবি করে প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান থেকে ভাড়া আদায় করছে। এসব ভাড়া আদায় নিয়ে সানরাইজ র্কর্তৃপক্ষ এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রতিনিয়ত বাকবিধন্ডা, ঝগড়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এ নিয়ে কয়েকদিন আগে কুয়াকাটা পৌরমেয়র সানরাইজ কর্তৃপক্ষকে সর্তক করে দিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সৈকতে নামতে সড়কের পশ্চিম পাশে সরদার মার্কেট কর্তৃপক্ষ এক অংশ পূর্বের টিনসেট ঘর ভেঙ্গে ২ ইঞ্চি এ্যাঙ্গেল দিয়ে ১৬ ফুট উচু করে ঝুকিঁপূর্ণভাবে তৈরি করছে বিশাল দোতালা। যেখানে থাকছে নিচে মার্কেট উপরে রেষ্টুরেন্ট ও আবাসিক হোটেল। সামান্য বাতাস এলেই এই স্থাপনা ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। সানরাইজ কর্তৃপক্ষও কাঠের একাধিক নতুন ঘর তুলছেন কোন বাঁধা ছাড়াই। এসব স্থাপনা তুলতে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি পক্ষ সহায়তা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।
এসব অবৈধ স্থাপনা তোলা এবং ভাড়া আদায়ের বিষয়ে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের সর্তক করেন কয়েকবার। এছাড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভাড়া না দিতেও বলেন। তবুও থেমে নেই র্নিমাণ কাজ।
সরদার মার্কেটের সভাপতি মো. মাসুদ জানান, টিনের নড়বড়ে ঘর তুলে তাদের কাছে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। এর উপর আবার এ্যাংগেল দিয়ে দোতালা ঘর তুলে খাবার হোটেল ও আবাসিক হোটেল তোলা হচ্ছে। এ ঘর খুবই ঝুকিঁপূর্ণ। যে কোন সময়ে সামান্য বাতাসেই ভেঙ্গে পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনার স্বীকার হতে পারেন তারা। মালিককে বলার পরও কর্ণপাত করছেন না।
কুয়াকাটা পৌর শ্রমিকলীগ সভাপতি আব্বাস কাজী বলেন, সরদার মার্কেট ও সানরাইজ কর্তৃপক্ষ সরকারি জমিতে অবৈধভাবে ঘর তুলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সৈকতের সাদাবালিতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও ভাড়া আদায় করছেন। ভাড়া না দিতে চাইলে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছেন।
সরদার মার্কেটের মালিক সাজেদুল আলম সাজু জানান, তারা অবৈধভাবে ঘর তুলছেন না। তাদের জমিতে ঘর নির্মাণ করতে পারবেন আদালতের এমন নির্দেশনা মেনেই তারা ঘর তুলছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। অবৈধভাবে কেউ স্থাপনা নির্মাণ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।