চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষিকা পাপিয়া শারমিন ইতির বিরুদ্ধে গৃহকর্মী লিলি খাতুনকে গাড়ি থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত পাপিয়া শারমিন ইতি চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবননগর) আসনের বর্তমান এমপি হাজী আলী আজগার টগরের শ্যালিকা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে গৃহকর্মী লিলিকে টেম্পু থেকে ফেলে দেন শিক্ষিকা পাপিয়া শারমিন ইতি। এতে গুরুতর আহত হন লিলি। তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত গৃহপরিচারিকার ছেলে শাহেদ আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। আমার মা লিলি খাতুন (৫০) অন্যের বাড়ীতে ঝিঁয়ের (গৃহপরিচারিকার) কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আমার মা গত দু’সপ্তাহ আগে জীবননগর সরকারী মহিলা কলেজের প্রফেসর পাপিয়া সারমিন ইতির বাড়ীতে মাসিক দু’হাজার টাকা চুক্তিতে গৃহকর্মি হিসাবে কাজ শুরু করেন। মায়ের নিকট শুনেছি ওই প্রফেসর ইতির নিকট থেকে আমার মা কিছু টাকা আগাম নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, কাজ শুরুর পর থেকে আমার মায়ের কাজে অসন্তুষ্ট ছিলেন প্রভাষক ইতি। এ কারণে নানাভাবে আমার মাকে নির্যাতন করতেন। শুক্রবার আমার মা অগ্রিম টাকা নিয়ে আন্দুলবাড়িয়ায় আরেক বাসায় কাজ নেন। বিষয়টি জেনে শনিবার সকালে জোর করে আমার মাকে ওই বাসা থেকে নিয়ে যান ইতি। বাসায় নিয়ে যাওয়ার পথে টেম্পুতে মায়ের সঙ্গে ইতির কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমার মাকে ধাক্কা দিয়ে টেম্পু থেকে ফেলে দেন তিনি। এতে আমার মা মারাত্মকভাবে আহত হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রবিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রভাষক পাপিয়া শারমিন ইতি বলেন, গৃহকর্মী লিলি খাতুন আমার সঙ্গে টেম্পুতে করে আসছিল। পথিমধ্যে লিলি টেম্পু থেকে পড়ে যায়। আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছি কথাটি সঠিক নয়। লিলি খাতুন আমর ফুফু হয়। তিনি বিভিন্ন এনজিও থেকে অনেক টাকা ঋণ নেয়ায় চিন্তা করতে করতে গাড়ী থেকে পড়ে যায়। আমি এমপি সাহেবের শ্যালিকা হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গনি মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।