Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পার্বতীপুরে যৌতুকের বলি অনিমার জীবনের মূল্য ৩লাখ টাকা!

আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ 
প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:০৭ PM
আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:০৭ PM

bdmorning Image Preview


দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বিয়ের একমাস পর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে অনিমা মহন্ত নামে এক গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। 

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, একমাস আগে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর বানিয়াপাড়া এলাকার সুশিল চন্দ্রের ছেলে স্বাধীন, অনিল চন্দ্র মহন্তের মেয়ে অনিমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে অনিমা রাজি না হওয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ কলেজ পড়–য়া ওই ছাত্রীকে উত্যক্ত করে আসছিল স্বাধীন। পরবর্তিতে দু'পরিবারের সম্মতিক্রমে তাদের বিয়ে হয়।

এরপর থেকে শুরু হয় অনিমার উপর স্বামী স্বাধীন ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের যৌতুকের দাবিতে মানসিক নির্যাতন। প্রতিনিয়তই শ্বশুর বাড়ি থেকে ফোন আসতে থাকে যৌতুকের নগদ অর্থ, মোটরসাইকেলসহ স্বর্ণালঙ্কারের জন্য। এরইমধ্যে মেয়ে পক্ষ থেকে অনিমার শ্বশুর বাড়িতে টিভিএস মোটরসাইকেলসহ নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।

এতে বেড়ে যায় গৃহবধূ অনিমার উপর স্বামীর পরিবারের লোকজনের যৌতুকের দাবিতে মানসিক নির্যাতন। শুরু হয় মুঠোফোন, শ্বশুর বাড়ির লোকজন পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় কবে দেওয়া হবে ৫ভরি স্বর্ণালঙ্কার। গৃহবধূ অনিমা তার দিনমজুর বাবার ৫ভরি স্বর্ণালঙ্কার না দিতে পারার অসহায়ত্বের কথা ভেবে যৌতুকের দাবিতে মানসিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে অবশেষে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ।

অবশেষে বুধবার (৩১ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৫টায় খোলাহাটি রেলস্টেশন পশ্চিমে বানিয়াপাড়া এলাকায় পার্বতীপুর থেকে লালমনিরহাট গামী চলন্ত বুড়িমারি ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে অনিমা।

পরে মিমাংসায় ছেলে পক্ষ চাপাচাপিতে নিহত অনিমার জীবনের মূল্য উঠে মাত্র ৩ লাখ টাকায়। আর ফেরৎ দেওয়া হয় অনিমার বাবার দেওয়া টিভিএস মোটরসাইকেলটি।

ঘটনার পর পরই সরেজমিনে গেলে অনিমার শ্বশুর সুশিল যৌতুকের জন্য নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। ঘটনার পর থেকে স্বামী স্বাধীন গা ঢাকা দিয়েছে।

এ বিষয়ে নির্যাতনকারী অনিমার স্বামী স্বাধীনসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান অনিমার মাসহ তার পরিবারের লোকজন। 

পরে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানাপুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।


 

Bootstrap Image Preview