Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চিকিৎসকসহ জনবল সংকটে কুয়াকাটায় বিশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল!

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:২৫ PM
আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:২৫ PM

bdmorning Image Preview


পর্যাপ্ত অবকাঠামোসহ আধুনিক চিকিৎসা উপকরণ থাকা সত্ত্বেও নানা সমস্যায় গত কয়েক বছর ধরে চরম অসুস্থতায় ভুগছে কুয়াকাটা বিশ শয্যা বিশিস্ট হাসপাতাল। কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ চারটি ইউনিয়ন ও কুয়াকাটা পৌরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হলেও চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। ফলে সাধারণ মানুষের দোড় গোড়ায় স্বাস্থ্য পৌছে দেওয়ার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে তা পুরোপুরি ব্যাহত হচ্ছে। 

সূত্র জানায়, কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় ইউনিয়ন মহিপুর, লতাচাপলী, ধুলাসর ও ডাবলুগঞ্জের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষসহ কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কুয়াকাটার অদূরে তুলাতলীতে গড়ে তোলা হয় বিশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। দৃষ্টিনন্দন ভবনসহ আধুনিক চিকিৎসা উপকরন দিয়ে সজ্জিত করা হয়।

২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এর উদ্বোধন করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিয়োগ দেওয়া হয় পর্যাপ্ত চিকিৎসকসহ জনবল। কিন্তু উদ্ভোধনের কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রশিক্ষনসহ বিভিন্ন অজুহাতে চিকিৎসসহ বিভিন্ন দফতরে নিয়োগকৃত জনবল বদলি হতে থাকে। ফলে হাসপাতালে দেখা দেয় চিকিৎসকসহ জনবল সংকট।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কাগজে কলমে ছয়জন এমবিবিএস ডাক্তার, পাঁচজন নার্স, দু'জন ওয়ার্ড বয়, একজন করে এমএলএসএস, ঝাড়–দার, মালি, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ল্যাব সহকারি, ফার্মাসিস্ট, অফিস সহকারি, কুক থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এখানে কর্মরত আছে দুইজন এমবিবিএস চিকিৎসক, তিনজন নার্স, একজন ঝাড়–দার, একজন কুক, একজন অফিস সহকারী। মালি, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ল্যাব সহকারী, ফার্মাসিস্টসহ এমবিবিএস চিকিৎসকের পদ শুন্য রয়েছে। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলে, নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষসহ পর্যটক।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের অধিকাংশ কক্ষই তালাবদ্ধ। ভিতরে ও বাইরে ময়লা জমে নোংরা হয়ে আছে। অধিকাংশ বৈদ্যুতিক পাখা কাজ করছে না। নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের পেহাতে হচ্ছে চরম র্দুভোগ। পাওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় ঔষুধ। জানা যায় বছরের পর বছর ধরে তালা বন্ধ রয়েছে অপারেশ থিয়েটার। 

স্থানীয় সেবা গ্রহীতাদের অভিযোগ, জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই ২২ কিলোমিটার দূরে কলাপাড়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে গর্ভবর্তী মা ও শিশুরা। নতুন ডাক্তাররা তদবির করে জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা হাসপাতালে ডেপুটেশনে চাকরি করছেন। ফলে গরিব ও অসহায় রোগীরা সরকারি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন

সেবা গ্রহীতারা আরো অভিযোগ করেন, কুয়াকাটা হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাম, এক্সরেসহ প্যাথলজি সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে রোগীদের পরীক্ষাÑনিরীক্ষার জন্য বহিরাগত ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে লাইসেন্সবিহীন ডায়াগনষ্টিক ল্যাবগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। 

কুয়াকাটা হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, চিকিৎসা সেবা দিতে দুইজন চিকিৎসককে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার জানান, কুয়াকাটা হাসপাতালের চিকিৎসকসহ জনবল সংঙ্কটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই চাহিদানুযায়ী চিকিৎসক ও জনবল পাওয়া যাবে।   

 

Bootstrap Image Preview