Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নতুন ৪ সেবায় ভ্যাট অব্যাহতি পাচ্ছেন পোশাক মালিকরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০২:২০ PM
আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০২:২১ PM

bdmorning Image Preview


জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরও ৪ সেবায় ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হবে পোশাক মালিকদের।এগুলো হল- তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, ল্যাবরেটরি চার্জ, পরিবহন ব্যয় ও শ্রমিকদের বিনোদন ব্যয়। এসব সেবায় ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট দিতে হতো।

এরই মধ্যে এর সারসংক্ষেপ অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।অনুমোদন পেলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। বিজিএমইএ’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে ১৬ ধরনের সেবায় তৈরি পোশাক মালিকদের ভ্যাট দিতে হয় না।

জানা যায়, ২০০৫ সালে পণ্য উৎপাদন, রফতানি কার্যক্রম-সংশ্লিষ্ট ১৬ ধরনের সেবার ওপর রফতানিকারকদের ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হয়। এর মধ্যে পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিলে ৮০ শতাংশ, ওয়াসার পানিতে ৬০ শতাংশ এবং জোগানদার, সিকিউরিটি সার্ভিস, পরিবহন ঠিকাদার ও বিদেশি সেবা গ্রহণের বিপরীতে শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া আছে।

পণ্যের কাঁচামাল আমদানি ও পণ্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে বন্দর সেবায় শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া আছে। বন্দর সেবা, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স, ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং সংস্থা, বীমা কোম্পানি ও শিপিং এজেন্ট বিলের ওপর শতভাগ অব্যাহতি সুবিধা পান রফতানিকারকরা।

এর বাইরে দুটি টেলিফোন, একটি টেলেক্স ও একটি ফ্যাক্স বিলের ওপর শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া আছে ২০০৫ সাল থেকে। রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানের অগ্নিবীমার প্রিমিয়ামে শতভাগ, বিদেশে নমুনা পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কুরিয়ার সার্ভিস সেবায় শতভাগ অব্যাহতি আছে।

এছাড়া রফতানির বিপরীতে প্রাপ্ত কমিশন, ফি ও চার্জের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। তবে এসব সুবিধা স্থানীয় বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদনকারীরা পান না। সূত্র জানায়, বিজিএমইএ দীর্ঘদিন ধরে রফতানি-সংশ্লিষ্ট সব ধরনের সেবা থেকে ভ্যাট অব্যাহতি দাবি করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ ধরনের সেবার মধ্য থেকে নতুন আরও ৪ সেবার ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তৈরি পোশাক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব সেবার বিপরীতে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পকে শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া উচিত। বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিলে ৮০ শতাংশ ও পানির বিলে ৬০ শতাংশ হারে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

এ অব্যাহতির সুবিধা উদ্যোক্তারা নিতে পারছে না। কারণ অব্যাহতি অর্থ পেতে সব প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদফতরের (ডেডো) যেতে হয়। সেখান থেকে অর্থ ফেরত পেতে দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকতে হয়। এ সমস্যা সমাধানে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতকে শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া দরকার। তাদের মতে, ভ্যাটের সমস্যা এখানেই শেষ নয়। ইদানীং ভ্যাট গোয়েন্দারা তৈরি পোশাক শিল্পে অডিটের নামে হয়রানি করছেন। শ্রমিকদের ওভারটাইমের সময় দেয়া রুটি-কলার ব্যয়ের বিপরীতে তারা ভ্যাট দাবি করছেন।এ ধরনের খরচের হিসাব কোনো মালিকের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পকে সম্পূর্ণরূপে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছি। এজন্য ১১টি সেবায় ভ্যাট অব্যাহতি দিতে এনবিআরকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভ্যাট অব্যাহতির যৌক্তিকতা প্রশ্নে তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প বিভিন্ন ধরনের সেবা গ্রহণ করে। কিন্তু ভ্যাটের জন্য ওই সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে না ধরে পোশাক শিল্পকে ধরা হচ্ছে।

তাদের হিসাব পোশাক মালিকরা রাখবে কেন? এনবিআর যদি ভ্যাট আদায় করতে চায়, তাহলে সেবা প্রদানকারীর কাছ থেকে আদায় করুক। এতে বিজিএমইএ’র আপত্তি নেই।

রফতানিকারক সমিতির প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎ, পানির বিলে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেয়া থাকলে মালিকরা সে সুবিধা নেন না। এ অব্যাহতির অর্থ ফেরত পেতে হয়রানি হতে হয়।

২-৩ বছরেও আবেদন নিষ্পত্তি হয় না। আবার আবেদন নিষ্পত্তিতেও খরচ লাগে। সব মিলিয়ে এ সুবিধা ব্যবসায়ীদের কাজে আসছে না। তার মতে, ৬০ শতাংশ, ৮০ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দিয়ে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ব্যবস্থা বহাল রাখা হয়েছে।

যদিও এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, তৈরি পোশাক খাত বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহন করে। তাই সব সেবায় তাদের সম্পূর্ণ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া সম্ভব না। কিছু ক্ষেত্রে শতভাগ অব্যাহতি না দিয়ে স্ল্যাবভিত্তিক সুবিধা দেয়া হয়েছে।আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেয়াত গ্রহণের পদ্ধতি রাখা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ৪টি সেবাকে ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

Bootstrap Image Preview