Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে এখন বাঙালি গৃহবধূ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৪৩ PM
আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৪৩ PM

bdmorning Image Preview


তাদের মধ্যকার ভৌগলিক দূরত্ব কয়েক হাজার মাইল। কিন্তু ভৌগলিক দূরত্ব কি প্রেম-ভালোবাসাকে আটকে পারে? এ প্রশ্নের সবাই বলবেন না পারে না। তেমনই একটি ঘটনা ঘটল ভারতের যুবক আর কানাডার যুবতীর সাথে!

কানাডার কিউবেক প্রদেশের মন্ট্রিল আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আঠাশ বছর বয়সী ক্যাথরিন ওয়ালেট আর ত্রিশ বছর বয়সী টিঙ্কু রায়ের প্রেমও ছিল সে রকম। দূরত্ব তাদের আটকে রাখতে পারেনি।

দুর্গাপজার সপ্তমীর দিন সাতপাকে বাঁধা পড়া ক্যাথরিনই এখন টিনের চালের নীচে, পাটকাঠির বেড়ায় ঘেরা বাড়ির নয়নের মণি। প্রেম কাহিনিটা অনেকটা সিনেমার কাহিনীর মতোই। ভারতের গণমাধ্যম সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, ক্যাথরিনের বাবা সিলেস ওয়ালেট আর মা হেলেনি ফ্রেচেট, দু’জনই নার্সের চাকরি করেন। বোন ভ্যালেরিকে নিয়ে বছরখানেক আগে ভারতে বেড়াতে এসেছিলেন ক্যাথরিন। ঘুরতে ঘুরতে উত্তরাখণ্ডের হৃষিকেশের একটি যোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেন কানাডার তরুণী। সেখানে আলাপ ও প্রেম যোগ প্রশিক্ষক টিঙ্কুর সঙ্গে। সেই প্রেম আরও গাঢ় হয়, পরিণতি গড়ায় বিয়েতে।

এ দিকে আশ্রমপাড়ার নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান টিঙ্কু। বাবা শিবানন্দ সেলুনের সামান্য আয় থেকে মানুষ করেছেন চার ছেলেকে। দারিদ্র থেকে মুক্তি পেতে টিঙ্কু লড়াই শুরু করেছিলেন বেশ কয়েকবছর আগেই।

টিঙ্কু ২০১১ সালের দিকে সোনারপুরের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্টে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। ২০১৪ সালে বাড়ি ফিরে কালনা কলেজ থেকে যোগের একটি সার্টিফিকেট কোর্স করেন। তার পর হরিদ্বারে গিয়ে যোগগুরু রামদেবের আশ্রমে ছিলেন তিন মাস। পরে হৃষিকেশের লক্ষ্মণঝুলার কাছে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকার পাশাপাশি ওই এলাকার কয়েকটি যোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পার্টটাইম প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন।

অন্যদিকে, কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছরের মাস্টার্স কোর্স শেষ করেন ক্যাথরিন। ২০১৭ অক্টোবরে বোনের সঙ্গে ভারতে বেড়াতে আসেন তিনি। এরপর ভারতে হৃষিকেশের যোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে টিঙ্কুর সঙ্গে আলাপ অতঃপর প্রেম হয় তার।

এ বিষয়ে টিঙ্কু জানান, প্রথম দেখাতেই ক্যাথরিনকে ভালো লেগে গিয়েছিল তার। ক্যাথরিন বলেন, মানুষ হিসাবে টিঙ্কুকে তার খুব ভালো লেগেছিল।

এভাবে প্রেম চলতে থাকে তাদের। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই দু’জনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তারা ঠিক করেন মহাসপ্তমীতে হবে বিয়ে।

এই বিয়েতে সম্মতি দেন ক্যাথরিন এর পরিবারও। তাই আর কোন বাধাই থাকে না তাদের  মাঝে। একদম বাঙালি রীতি মেনেই সাত পাকে ঘুরে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

হাতে শাখা আর সিঁথিতে লাল সিঁদুর, পরনে আটপৌরে শাড়ি। একেবারে নতুন সাজগোজে শ্বশুরবাড়িতে বেশ মানিয়ে নিয়েছেন ক্যাথরিন৷ সুখেই দিন কাটছে তার। সামান্য বাংলা বলতে পারেন।

এ বিষয়ে ক্যাথরিন বলেন, গত শীতে কালনায় এসে নলেন গুড়ের রসগোল্লা খুব ভালো লেগেছিল আমার। এখানকার অন্যান্য সন্দেশ, মিষ্টিও ভালো লেগেছে। কানাডায় রান্না করতেন ক্যাথরিন, কিন্তু এখানকার রান্নার পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও ফেলে আসা দেশের রান্না করতে পারছেন না।

তিনি বলেন, স্বামীকে নিয়ে ১৫ নভেম্বর কানাডায় যাচ্ছেন তিনি। কিছুদিন সেখানে কাটিয়ে ফিরবেন শ্বশুরবাড়িতে।

শাশুড়ি দীপ্তি রায় বললেন, ছেলে আর বৌমা দু’জনেই নিরামিষ খান। তাই তাদের জন্য থালা-বাসন সব আলাদা রেখেছি।

Bootstrap Image Preview