Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

এই শীতে ঘুরে আসুন মন জুড়ানো কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক

এম. সালাহ উদ্দিন আকাশ, উখিয়া প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৩৩ PM
আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৩৩ PM

bdmorning Image Preview


কক্সবাজার ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হলো- পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ রোড। ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রোড পর্যটন শহর কক্সবাজারের কলাতলী থেকে শুরু হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। মেরিন ড্রাইভ রোডের এক দিকে রয়েছে উত্তাল সমুদ্র সৈকত আর অন্য দিকে রয়েছে সবুজের ঢাকা ছোট বড় পাহাড়। আবার কোথাও কোথাও পাহাড়ের গা বেয়ে ঝর্ণা ধারার দেখা মিলে।

মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে যেতে যেতে বিস্তৃত সাগরের সমস্ত সৌন্দর্য্য আহরণ ও জেলেদের সাগরে মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সেই সাথে সমুদ্র সৈকতে দেখা মিলবে টেকনাফ গর্জন ফরেস্ট খ্যাত চিরহরিৎ বন। কক্সবাজারের কলাতলী বা সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে খোলা জিপ, মাইক্রোবাস, সিএনজি কিংবা অটোরিকশায় মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে হিমছড়ি ও ইনানী সমুদ্র সৈকত যাওয়া যায়।

মেরিন ড্রাইভ রোডে কিভাবে যাবেন:

মেরিন ড্রাইভ রোডে ভ্রমণ করতে হলে আপনাকে কক্সবাজার আসতেই হবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিভিন্ন উপায়ে আসা যায়। ঢাকা থেকে সৌদিয়া, এস আলম মার্সিডিজ বেঞ্জ, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস.আলম পরিবহন, মডার্ন লাইন ইত্যাদি বাস প্রতিদিন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। শ্রেণিভেদে বাসগুলোর প্রতি সীটের ভাড়া ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার পর্যন্ত।

ঢাকা থেকে ট্রেনে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন হতে সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী ট্রেনে সুবিধানুযায়ী যাত্রা করতে পারেন। এরপর চট্টগ্রামের নতুন ব্রীজ এলাকা অথবা ধামপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে এস আলম, হানিফ অথবা ইউনিক পরিবহনের বাসে কক্সবাজার আসতে পারবেন। বাসভেদে ভাড়া ২৮০ থেকে ৫৫০ টাকা নিবে।

এছাড়া বাংলাদেশ বিমান, জিএমজি এয়ার লাইনস, ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজসহ বেশকিছু বিমান ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। এছাড়া আকাশপথে চট্রগ্রাম এসে সড়ক পথে উপরে উল্লেখিত উপায়ে কক্সবাজার যেতে পারবেন।

কক্সবাজার থেকে মেরিন ড্রাইভ রোড:

সুগন্ধা পয়েন্টে মেরিন ড্রাইভ রোড যাবার খোলা জীপ, মাইক্রোবাস, সিএনজি ও অটো পাবেন। সিএনজি কিংবা অটোরিক্সাতে করে মেরিন ড্রাইভ রোড ঘুরে আসতে অনেক বেশি সময় লাগবে। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার জন্য খোলা জীপ গাড়ি ভাড়া করুন। এখানে সিজনের উপর গাড়ি ভাড়া নির্ভর করে। অফ সিজনে গাড়ি রিজার্ভ করতে ৪০০০ টাকা লাগতে পারে। আর সিজনে লাগবে প্রায় ৫০০০ টাকা।

মেরিন ড্রাইভ রোড সম্পূর্ন ঘুরে আসতে প্রায় ৫ ঘন্টার মত সময় লাগবে। যদি সম্পূর্ন মেরিন ড্রাইভ রোড দেখতে চান তবে গাড়ি ঠিক করার সময় ড্রাইভারকে সেটা জানিয়ে রাখবেন। তা না হলে হয়তো আশেপাশের একটু জায়গা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। অথবা আপনার হাতে যদি অল্প সময় থাকে তাহলে হিমছড়ি কিংবা ইনানী বীচ পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে অটোরিক্সা/ইজিবাইক অথবা সিএনজি রিজার্ভ করে নিতে পারেন।

কোথায় থাকবেন:

কক্সবাজার প্রায় পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল বা কটেজ আছে। এদের মধ্যে মারমেইড বিচ রিসোর্ট, সায়মন বিচ রিসোর্ট, ওশেন প্যারাডাইজ, লং বীচ, কক্স টুডে, হেরিটেজ, সী প্যালেস, সী গাল, কোরাল রীফ, নিটোল রিসোর্ট, আইল্যান্ডিয়া, বীচ ভিউ, সী ক্রাউন, ইউনি রিসোর্ট, উর্মি গেস্ট হাউজ, কোরাল রীফ, ইকরা বিচ রিসোর্ট, অভিসার, মিডিয়া ইন, কল্লোল, হানিমুন রিসোর্ট, নীলিমা রিসোর্ট উল্লেখ্য।

অফ সিজনে অগ্রিম হোটেল বুকিং না দিলেও রুম পাবার নিশ্চয়তা থাকে কিন্তু ডিসেম্বরের ১৫ থেকে জানুয়ারী ১৫ তারিখ পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং দিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।অফসিজনে সাধারণত হোটেলের ভাড়া অর্ধেকেরও কম থাকে। সময় থাকলে কক্সবাজার নেমেই একটু দরদাম করে হোটেল খুঁজে নিলেই ভালো। বিচ ও মেইন রোড থেকে হোটেল যত দূরে হবে থাকার ভাড়া সাধারণত কম হয়ে থাকে। হোটেল খোঁজার ক্ষেত্রে রিকশাওয়ালা বা সিএনজিওয়ালার পরামর্শ নেয়া উচিত নয়। প্রয়োজনে হোটেলের ফেইসবুক পেইজ বা ওয়েবাসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।

কোথায় খাবেন:

মেরিন ড্রাইভ রোডের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। চাইলে এসব রেস্টুরেন্টের একটাতে উদরপূর্তি করে ফেলতে পারেন। আবার কক্সবাজারে সব ধরণ ও মানের রেস্টুরেন্ট আছে। মধ্যম মানের বাজেট রেস্টুরেন্টের মধ্যে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি ইত্যাদি উল্লেখ করার মত। সিজন অনুসারে অন্য অনেক কিছুর মত এখানে খাবারের দামও কম/বেশি হতে পারে।

জেনে রাখা ভাল:

পথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কয়েকটি চেকপোস্ট পড়বে। সেখানে বিনা সংকোচে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। ঝামেলা এড়াতে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সঙ্গে রাখুন।

Bootstrap Image Preview