Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ধুনট সরকারপাড়া বউ মেলা সম্প্রীতির মেলবন্ধন

রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ০২:২৬ PM
আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ০২:২৬ PM

bdmorning Image Preview


বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার সরকারপাড়া ইছামতি নদীর তীরে এক’শ বছরের বেশী সময় ধরে বসছে বউ মেলা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দুর্গাপূজাকে ঘিরে ‘বউমেলা’ নামে ব্যতিক্রমী এই মেলা বসেছে। আশপাশের জেলার মানুষ আসে প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা এই মেলায় অংশ নিতে। অনেক আবেগ এবং গভীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এই মেলা।

পুরনো স্মৃতির পটভূমিতে নতুন করে আঁচড় কাটে এই বউ মেলা। তাই বছর ঘুরে এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকে সবাই। মেলায় আসা মানুষের ৯৫ শতাংশই নারী। এ জন্য স্থানীয়ভাবে এটি বউ মেলা নামে পরিচিত। মেলায় সব ধর্মের মানুষের মহামিলন ঘটে। কে হিন্দু কে মুসলিম এমন কিছুর বালাই নেই। কেবল পূজার ধর্মীও অনুসঙ্গই নয়, মেলা যেন হয়ে ওঠে সার্বজনীন আনন্দ-বিনোদনের একটি অংশ। মেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক গভীর মেলবন্ধনের সৃষ্টি হয়।

সরেজমিন মেলায় গিয়ে দেখা যায়, পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন আরও নানা গ্রামের ব্যবসায়ীরা। মিষ্টান্ন, শিশুতোষ খেলনা, চুড়ি, দুল, ফিতা, আলতা থেকে ঘর গৃহস্থালির বিচিত্র জিনিস। জিলাপি ভাজা হচ্ছে ২০টিরও বেশী দোকানে। বিক্রি হচ্ছে ধুমসে। মেলা শেষে যে জিলাপি কিনেই বাড়ি ফিরতে হয়। মেলায় এসেছেন চৌকিবাড়ি গ্রামের ওমর ফারুক। তিনি বলেন, পুরানো ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন সরকারপাড়া বউ মেলাটি। এখনও কত দর্শনার্থী। আমি আসি ঐতিহ্যের গরম জেলাপি নিতে। 

মেলাটি শুধু মেলা প্রাঙ্গনেই সীমিত নয়, এ উপলক্ষে জামাতা ও আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করার রেওয়াজও যথারীতি চলেছে। বাড়িতে বাড়িতে বানানো হয়েছে খই, মুড়কি, নারকেল ও চিড়া-মুড়ির নাড়ু।

মেলায় খুড়তে আসা প্রবীন দিপালী রানী বলেন, মেলা থেকে আগে পেতাম মাটির হাড়ি ঝুলিয়ে রাখার জন্য পাটের তৈরী শিকা। কালের আবর্তে সেই শিকা এখন আর নেই। 

মেলাটির আয়োজক কমিটির কোষাধ্যক্ষ আনন্দ সরকার বলেন, প্রতিমা বির্সজনের দিন মেলাটি হয়ে থাকে। এ জন্য আগাম কোন ঘোষণা দেওয়া হয় না। একশ বছরের বেশী সময় ধরে এইদিনে মেলাটি বসছে। দুরদুরান্তের মানুষ এখনো আসছে মেলার আনন্দ নিতে। সে কারণে সব রকমের সুবিধা রাখতে আয়োজক কমিটি প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এবারও সেরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মেলায় নিরাপত্তার জন্য সারাদিন পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশা বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলার ইতিহাস ধরে রাখতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে সরকারপাড়া গ্রামের মানুষ। প্রতিবছর তারা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে অব্যাহত রেখেছেন এই মেলাটির আয়োজন।

Bootstrap Image Preview