সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। সৌদি সরকার শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক খাগোসিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
শনিবার (২০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে সৌদির জেনারেল প্রসিকিউটর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন ‘প্রাথমিক তদন্তের’ বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে ‘এক সংঘর্ষে’ খাসোগি নিহত হয়েছেন।
জামাল খাসোগিকে হত্যার তদন্তের খাতিরে ১৮ সৌদি নাগরিককে আটক করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টিভি আরো জানিয়েছে, সৌদি উপ-গোয়েন্দা প্রধান আহমাদ আল-আসিরি ও দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সিনিয়র সহকারী সৌদ আল-কাহতানিকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া পার্স টুডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সৌদি আরবের রাজতন্ত্রের তরফ থেকে এই প্রথম খাসোগির নিহত হওয়ার খবর স্বীকার করা হলো।
ভারতীয় সংবাদসংস্থা হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে সৌদি রাজা সালমানের কথা বলার কিছুক্ষণ পর দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সংবাদ শিরোনামে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে খাসোগির সঙ্গে কয়েকজন ব্যক্তির ‘মারামারি’ হয়েছে এবং সে কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে সৌদির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে।
এর আগে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, খাসোগিকে জীবিত অবস্থায় টুকরো টুকরো করা হয়। তাকে হত্যা করতে মাত্র সাত মিনিট সময় নেওয়া হয়েছে। একজন সৌদি ফরেনসিকের নেতৃত্বে খাসোগির মৃতদেহ টুকরো করা হয়। সেই সময় ওই ফরেনসিক তার সহকর্মীদের গান শুনতে বলেন। হত্যা করার আগে খাসোগিকে নির্যাতন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২ অক্টোবর তুরস্কে নিযুক্ত সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগি ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর থেকে নিখোঁজ হন। তুরস্কের দাবি ছিল, খাসোগিকে কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করে তার মরদেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যদিও সৌদি আরব তখন বলেছিল, খাসোগি সম্পর্কে তুরস্ক যে দাবি করেছে তা মিথ্যা।
সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক খাসোগি ২০১৭ সাল থেকে ওয়াশিংটনে স্বেচ্ছা-নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন। বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র জোগাড়ে তিনি বাগদত্তাকে বাইরে রেখে ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন। এরপর থেকেই তার খোঁজ নেই বলে দাবি করেছিল তার বাগদত্তা হেটিস সেনগিজ।