ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের ছাদ থেকে চার দিনের নবজাতক সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে আত্মহত্যা করেছেন সীমা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ।
নিহত সীমা সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের ঘাটিয়ারা ফুলচং গ্রামের মনির মিয়ার স্ত্রী। মনির লেবানন প্রবাসী।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শহরের পুরাতন জেলরোডস্থ দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও স্পেশালাইজড হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
জসিম মিয়া নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি ল্যাব এইড হাসপাতালের উল্টো দিকে একটি রেস্টুরেন্ট নাস্তার অর্ডার দিয়ে বসেছিলাম। হঠাৎ দেখি হাসপাতালের ছাদ থেকে এক নারী তার নবজাতককে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই নবজতাকটির মৃত্যু হয়। এরপর ওই নারীও যখন লাফিয়ে পড়ার চেষ্টা করছিল আমরা তখন লাফ দিতে মানা করছিলাম। কিন্তু মিনিট তিনেক পরে ওই নারীও আমাদের কথা না শুনে নিচে লাফিয়ে পড়েন।
ফরিদা খাতুন নামে সীমার পাশের বেডের (৩০৩) এক রোগীর স্বজন বলেন, সারারাত বাচ্চাটি দুধের জন্য কান্নাকাটি করছিল। সীমা ফোনে কারো সঙ্গে ঝগড়া করছিল। ফোনে সে বলছিল ‘বাচ্চাকে দুধ দিতে হবে না, সকালে দেখবা আমি কি করি’।
তবে হাসপাতালে উপস্থিত সীমার মা রেহানা বেগম কী কারণে তার মেয়ে নবজাতককে নিয়ে লাফিয়ে পড়েছেন সেটি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি।
পুলিশ জানায়, গত এক বছর আগে পারিবারিকভাবে মনির মিয়ার সাথে সীমা আক্তারের বিয়ে হয়। এরপর গত ১৬ অক্টোবর বিকেলে প্রসব বেদনা নিয়ে সীমা জেলরোডস্থ লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ৩০২ নম্বর বেডে ভর্তি হন। এদিন সন্ধ্যায় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন সীমা। শুক্রবার সকালে হাসপাতাল থেকে তাদের ছাড় পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রহস্যজনক কারণে লাইফ কেয়ার হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও স্পেশালাইজড হাসপাতালের ছাদ থেকে সীমা প্রথমে তার নবজাতককে ছুঁড়ে ফেলে দেনে। এরপর তিনি নিজেও নিচে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ১নং ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) উসমান গণি বলেন, স্বামীর সাথে সীমার কোনো বিষয়ে কলহ চলছিল কি-না সেটি আমরা এখনো জানতে পারিনি। কী কারণে তিনি ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছেন সেটিও স্পষ্ট নয়।