Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

টাকার বিনিময়ে পূজামণ্ডপে অদক্ষ আনসার নিয়োগ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:৪৬ PM
আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ

মাদারীপুরের চারটি উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৯১০ জন আনসার নিয়োগ করা হয়েছে। যার মধ্যে ট্রেনিংপ্রাপ্ত ও নন ট্রেনিংপ্রাপ্ত রয়েছে। এক একজন আনসারের কাছ থেকে ২শ' থেকে ৫শ' পর্যন্ত টাকা নিয়ে অস্থায়ী এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গড়ে ৩শ' টাকা করে নিলে প্রায় ৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নিয়েছে শুধু নিয়োগের জন্য। এ ছাড়া ডিউটির জন্য যে টাকা দেয়ার কথা বিগত বছরগুলোতে সম্পূর্ণ টাকা পায়নি আনসার সদস্যরা। সেখান থেকে টাকা কেটে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলা চারটি উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১ হাজার ৯১০ জন আনসার নিয়োগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে এবছর যারা পিসির দায়িত্বে আছে ২ হাজার ৬২৫ টাকা এবং যারা কর্মী হিসেবে আছে তারা পাবে ২ হাজার ৩৭৫ টাকা। কিন্তু যাদের টাকার বিনিময় নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাদের বলা হয়েছে গত বছর আনসাররা যে টাকা পেয়েছে, তাই তাদের দেয়া হবে। তার অর্থ গত বছর ১৫শ' টাকা তাদের দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের বরাদ্ধ ছিল ১৬শ' টাকা করে।

সরেজমিন বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, কাগজে কলমে প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৪ থেকে ৬ জন আনসার থাকার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে কোন মণ্ডপে ২ বা ৩ জন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ আনসার সদস্যের ছিল না সম্পূর্ণ পোশাক। কেউ লুঙ্গি পরে আছে আবার কারো পায়ে জুতা নেই স্যান্ডেল পরে ডিউটি করছে।

কিছু কিছু মণ্ডপে আনসারদের যে নামের তালিকা রয়েছে সেখানে অন্য লোক দিয়ে ডিউটি করানো হচ্ছে। আবার এদের বেশিরভাগ সদস্যের নেই কোন প্রশিক্ষণ। গ্রাম থেকে নিয়ে এসে পূজামণ্ডপে ডিউটিতে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া মাদারীপুর কালকিনি উপজেলা ও গোপলগঞ্জের কোটালিপাড়া সিমান্তবর্তী এলাকায় একটি সাধারণ পূজামণ্ডপে দুই জেলা থেকে ১০ জন আনসার সদস্য দেয়া হলেও ডিউটি দিচ্ছে ৬ জন আনসার সদস্য। কিছু সদস্য আছে যারা যানেই না মণ্ডপে ডিউটিটা কি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আনসার সদস্য বলেন, পূজামণ্ডপে ডিউটি করার জন্য আমাদের কাছ থেকে ২শ' থেকে ৫শ' পর্যন্ত টাকা নিয়েছে ইউনিয়ন কমান্ডার। টাকা না দিলে আমাদের ডিউটিতে আনবে না তাই বাধ্য হয়ে টাকা দিয়েছি। এর আগের বছরও এই টাকা দেয়ার কথা বলেছেন আনসার সদস্যরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পূজামণ্ডপের পরিচালক বলেন, মণ্ডপে খুবই বয়স্ক পুরুষ ও মহিলা আনসার পাঠানো হয়েছে। যাদের একদম প্রশিক্ষণ নেই। তারা শৃঙ্খলার কিছুই বোঝে না। আমাদের মণ্ডপের লোকজনই তাদের পাহারা দিয়ে রাখে।

এ ব্যাপারে জেলা কমান্ড্যান্ট মো. আব্দুল মজিদ এর সাথে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার তার অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তার সরকারি নাম্বারে ফোন করেও তার সাথে কথা বলা যায়নি।

পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বলেন, পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যে আনসার সদস্যরা রয়েছে তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকা নেয়া এবং পরিপূর্ণ ড্রেস ছাড়া ডিউটি করার বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি নিয়ে সমন্বয় মিটিংয়ে কথা বলবো।

আনসার নিয়োগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ট্রেনিং ছাড়া কি কাজ করবে, তাহলে তারা তো নিজেদেরকেই রক্ষা করতে পারবে না। অন্যদের রক্ষা করবে কিভাবে? গরীব মানুষ তাদের কাছ থেকে কেন টাকা নিবে। মিটিংয়ে আমরা বলেছি একদম অল্পবয়স্ক বা বেশি বয়স্ক লোক নিয়োগ করা যাবে না। মধ্যবয়স্ক লোক দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। সেখানেও তো আনসার লাকবে। আমরা বিষয়গুলো দেখছি। তা ছাড়া একজন সরকারি কর্মকর্তা (জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট) কেন তার সরকারি ফোন রিসিভ করবে না। এটা খুবই দুঃখজনক।

Bootstrap Image Preview