Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে ভাবে মারা যান কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১১:২৭ AM
আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১১:২৭ AM

bdmorning Image Preview


ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু রূপালি গিটার ফেলে বহুদূরে চলে গেলেন । বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে মৃত্যুবরণ করেছেন গুণী এই শিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। অসুস্থ অবস্থায় স্কয়ার হাসপাতালে আনার পর মারা যান তিনি। খবরটি নিশ্চিত করেছেন আইয়ুব বাচ্চুর ঘনিষ্ঠজন ও এলআরবি’র সদস্য শামীম।

শামীম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় আইয়ুব বাচ্চুর। হাসপাতালে আনার পরপরই তিনি মারা যান।’

পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাতে এলআরবি ব্যান্ড নিয়ে রংপুরে সংগীত পরিবেশন করেছেন আইয়ুব বাচ্চু। বৃহস্পতিবার সকালে তারা ঢাকায় ফেরেন। কিন্তু আইয়ুব বাচ্চু অস্বস্তি বোধ করছিলেন। সকাল ৮টার দিকে বাসায় ব্রেইন স্ট্রোক করেন তিনি। তখনই মস্কিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় এই সঙ্গীতশিল্পীর। তড়িঘড়ি তাকে স্কয়ার হাসপাতালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আনুমানিক সকাল ৯টায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর খবরে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সংগীতাঙ্গনের অনেকে এখন হাসপাতালে ভিড় করছেন। কণ্ঠশিল্পী সামিনা চৌধুরী, দলছুট ব্যান্ডের বাপ্পা মজুমদার, উপস্থাপক হানিফ সংকেত, অভিনেতা শংকর সাঁওজাল, আর্টসেল ব্যান্ডের লিংকনকে দেখা গেছে। 

এর আগে ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর ফুসফুসে পানি জমার কারণে স্কয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হয়েছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে আবারও গানে ফেরেন। কিন্তু এবার হুট করেই নিভে গেলো তার জীবনপ্রদীপ।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবির দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক। সঙ্গীতজগতে ১৯৭৮ সালে তার যাত্রা শুরু হয় ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোলস ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি। গুণী এই শিল্পী তার ভক্তদের কাছে ‘এবি’ নামেও পরিচিত। রক ঘরানার গানের এই শিল্পী আধুনিক আর লোকগীতিতেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন তিনি।

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ হলো তার প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। তার সাফল্যের শুরুটা হয় দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’র (১৯৮৮) মাধ্যমে।

বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীত জগতে গিটার ও গানের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন আইয়ুব বাচ্চু। গানের পাশাপাশি গিটারেও ভক্তদের মাত করেছেন তিনি।

আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া ‘রূপালি গিটার’, ‘রাত জাগা পাখি হয়ে’, ‘মাধবী’, ‘ফেরারি মন’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘ঘুমন্ত শহরে’, ‘বার মাস’, ‘হাসতে দেখ’, ‘উড়াল দেব আকাশে’। ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি,’ ‘সেই তুমি কেন অচেনা হলে’, ‘একদিন ঘুম ভাঙ্গা শহরে’, ‘মেয়ে ও মেয়ে’, ‘কবিতা সুখ ওড়াও’, ‘এক আকাশ তারা’ গানগুলো ঘুরেছে মানুষের মুখে মুখে।

১৯৭৮ সালে সঙ্গীতজীবন শুরু করেন আইয়ুব বাচ্চু। আইয়ুব বাচ্চু একাধারে গায়ক, লিড গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, প্লেব্যাক শিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন।

সোলসের হয়ে ব্যান্ড সঙ্গীতে পা রাখার পর ১৯৯০ সালে নিজের ব্যান্ড দল প্রতিষ্ঠা করেন আইয়ুব বাচ্চু। ব্যান্ডের নাম রাখেন ‘লিটল রিভার ব্যান্ড’। পরবর্তীতে এর নাম বদলে রাখা হয় ‘লাভ রান্‌স ব্লাইন্ড’।

ওই বছরই এলআরবি ডাবল অ্যালবাম দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে। আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। তার সফলতার শুরু দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’র মাধ্যমে। তিনি বেশ কিছু বাংলা ছবিতে প্লে-ব্যাকও করেছেন। ১৯৯৫ সালে বাচ্চু তার তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’ বের করেন। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা একক অ্যালবামগুলোর মধ্যে একটি এটি।

Bootstrap Image Preview