Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গ ইউনিটে ৩৪ পেয়ে ফেল, ঘ ইউনিটে ১১৪ পেয়ে প্রথম!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১২:২৬ PM
আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৩৫ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ, ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগে আটক, ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করে আবার তড়িঘড়ি ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত, পূনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবি এমন নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

এবার পাশ করেছে ২৬.২১ শতাংশ শিক্ষার্থী।তবে এবারের ঘ ইউনিটে নজিরবিহিন ঘটনা ঘটেছে অনেক। যেসব শিক্ষার্থী নিজের ইউনিটে পাশই করেনি তারাই আবার ঘ ইউনিটে মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছে। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের মধ্যে এই ফলাফল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব জায়গায় সমালোচনা হচ্ছে।

জানা গেছে, ঘ ইউনিটে মেধাতালিয়ায় ১০০ ক্রমের মধ্যে থাকা ৭০ জনের বেশি শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি।

এদের মধ্যে জাহিদ হাসান আকাশ ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। গত ১২ অক্টোবর তিনি ঢাবির সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তির জন্য ঘ ইউনিটে পরীক্ষা দেন। সেখানে ব্যবসায় শাখা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। অথচ ব্যবসায় শিক্ষা শাখার এই শিক্ষার্থী বাণিজ্য অনুষদে ভর্তির জন্য দেওয়া গ ইউনিটের পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন।

জাহিদ হাসান আকাশ নামের এই শিক্ষার্থী গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাবির গ ইউনিটের পরীক্ষায় তিনি বাংলায় পেয়েছিলেন ১০.৮ ইংরেজিতে পেয়েছিলেন ২.৪০। অথচ এই শিক্ষার্থী ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় বাংলায় ৩০ এর মধ্যে ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এর মধ্যে ২৭.৩০ পেয়েছেন।

এই শিক্ষার্থী ঢাবির গ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বমোট ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছিলেন ৩৪.৩২। অথচ মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ১১৪.৩০ পেয়ে সম্মিলিত মেধাতালিকার বাণিজ্য শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গত গত ২০ বছরের ভর্তি পরীক্ষার তথ্যমতে, ১২০ এর মধ্যে ১১৪.৩০ কেউ পায়নি। এছাড়া এবারের ঘ ইউনিটে বাণিজ্য শাখায় যিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন  তিনি ১২০ এর মধ্যে  পেয়েছেন ৯৮.৪০। অথচ নেই সেই বাণিজ্য ইউনিটে পাশ না করেও দ্বিতীয় স্থান অধিকারীকে টপকে গিয়েছেন বিরাট ব্যবধানের মার্ক নিয়ে।

আরেক শিক্ষার্থী তাসনিম বিন আলম ঢাবি ঘ ইউনিটে (বিজ্ঞান শাখায়) প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। অথচ বিজ্ঞান শাখার এই শিক্ষার্থী তার নিজের অনুষদ ক ইউনিটের পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে ৪৩.৭৫ পেয়ে ফেল করেছিলেন। সেই তিনিই ঢাবি ঘ ইউনিটে সে ১২০ নম্বরের মধ্যে ১০৯.৫০ পেয়ে সম্মিলিত মেধা তালিকার বিজ্ঞান শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।

নজিরবিহিন এই ফলাফলের বিষয়ে ঘ ইউনিট পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম যাচাই-বাছাই করার কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন,  ‘ভাইভাতে ভর্তি কমিটির লোক থাকবে, বিভাগের লোক থাকবে। সবাই মিলে আমরা যাচাই-বাছাই করব। অস্বাভাবিক কোনো কিছু পেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যদি আমার কাছে মনে হয় তখন কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিব। এখানে আমি কোনো ছাড় দেব না।’

এদিকে জালিয়াতি  চিহ্নিত হলে ভর্তি বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ঢাবি ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৮১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরীক্ষার পূর্বে বেলা ৯টা ১৭ মিনিটে অনেক ভর্তিচ্ছুর হোয়াটস অ্যাপ, মেসেঞ্জারে সাদা কাগজে উত্তরলেখা সম্বলিত প্রশ্ন আসে। অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে সাদা খাতার ৭২টি প্রশ্ন ও উত্তরের হুবহু মিল পাওয়া যায়। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ-উপচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।  

Bootstrap Image Preview