হঠাৎ করেই বিয়ের পিড়িয়ে বসলেন পুলিশের টিয়ারশেলে চোখ হারানো সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পরিবারের সম্মতিতে নিজ এলাকা ময়মনসিংহে ঘরোয়া পরিবেশে শুভ কাজ সম্পন্ন করেন সিদ্দিক।
সিদ্দিকুরের নববধু সুমাইয়া একটি কাওমি মাদ্রাসার ছাত্রী। তার বাবা গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক। তারা ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার তিলাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সিদ্দিকুর-সুমাইয়া সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন।
বিয়ের বিষয়ে সিদ্দিকুর রহমান জানান, আমি কিছুই জানতাম না, পরিবারের পক্ষ থেকে কনে ঠিক করা হয়। গত রোববার রাতে মা ফোন করে জরুরিভাবে বাড়ি আসতে বলেন। ৪ দিনের ছুটি নিয়ে ওইদিন রাতেই বাড়ি চলে আসি। বাড়ি যাওয়ার পর বিয়ের বিষয়টি জানতে পারি।
তিনি জানান, সোমবার বিকেলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পরদিন বউকে আমাদের বাড়িতে তুলে এনেছি। আপাতত সে ময়মনসিংহে আমাদের নিজ বাড়িতে থাকবে। পরে ঢাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বউকে নিয়ে আসবো। কিছুদিনের মধ্যে ঢাকায় বিয়ের অনুষ্ঠান করা হবে।
ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ করে বিয়ে করার, কিন্তু উভয় পরিবার রাজি থাকায় বিয়েতে আপত্তি করিনি। তবে বিয়ের পরও নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যাবেন বলে জানান সিদ্দিকুর।
এ বিষয়ে সিদ্দিকুরের মা ছোলেমা খাতুন জানান, বউয়ের নাম সুমাইয়া। সে আমার বোনের মেয়ে। আমরা ২ বোন রহিমা খাতুন আর সোলেমা খাতুন। সুমাইয়া একটি কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তার বাবা রহিম উদ্দিন কাজী স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। ছেলের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে বোনের মেয়েকে ছেলের বউ করে এনেছি।
তিনি জানান, আগামী শনিবার পুত্রবধূকে নিয়ে তিনি ঢাকায় ফিরবেন এবং রবিবার সিদ্দিকুর রহমান ঢাকায় এসে অফিস করবেন। তিনি সকলের কাছে তার ছেলে ও পুত্রবধূর জন্য দোয়া কামনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের পরীক্ষার রুটিনের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন সিদ্দিকুর রহমান। সেই ঘটনায় কাছ থেকে মারা পুলিশের টিয়ারশেলে মারাত্মক জখম হয় সরকারি তিতুমীর কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ুয়া সিদ্দিকুর রহমান। পরে একে একে দুইটি চোখের আলো চিরতরে হারায় এই তরুণ।
এরপর গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে টেলিফোন অপারেটর পদে চাকরি করছেন সিদ্দিকুর রহমান। নিয়োগপত্র অনুযায়ী প্রথমে তাকে ১৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। এক বছর পর তার চাকরি স্থায়ী হয়। বর্তমানে তার বেতন ২৩ হাজার টাকা।