Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আত্রাইয়ে ভরা মৌসুমে মাছ সংকটে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৪৭ AM
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৪৭ AM

bdmorning Image Preview


উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে ভরা মৌসুমে দেশীয় প্রজাতি মাছের তীব্র সংকটের মুখে শুঁটকি উৎপাদনকারীদের মাঝে হতাশার ছাপ দেখা দিয়েছে।

যে সময় শুঁটকি উৎপাদনে পরিবার পরিজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করার কথা। সে ভরা মৌসুমের শুঁটকি তৈরির চাতালগুলো গুটিয়ে রাখতে দেখা যাচ্ছে। ফলে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা পরিবার পরিজন নিয়ে উদ্বগ্নি হয়ে পড়ছেন এমনকি শুঁটকি উৎপাদনকারীদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। 

অন্যান্যবার এ মৌসুমে শুঁটকি উৎপাদনে ব্যাপক সরব থাকলেও এবারে নেই তাদের মাঝে আগ্রহ।  উপজেলার বেশির ভাগ শুটকি চাতাল মাছের অভাবে বন্ধ প্রায়।

জানা যায়, উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত স্থানসমুহের মধ্যে আত্রাইও একটি বিখ্যাত স্থান। প্রতিদিন শত শত টন মাছ আত্রাই থেকে রেল, সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়। সে অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদনেও আত্রাইয়ের যথেষ্ট প্রসিদ্ধ রয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বিশেষ করে আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাস শুঁটকি তৈরির মূল সময়। এ সময়গুলোতে নদী ও খালবিলে প্রচুর পরিমান দেশি মাছ ধরা পড়ে। আর ওই মাছগুলোর শুঁটকি তৈরি করে রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর, নিলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজুপরসহ দেশের প্রায় ১৫ থেকে ২০ জেলাতে বাজারজাত করেন আত্রাইয়ের শুঁটকি ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া মাছের শুঁটকি  তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় শতাধিক পরিবার। 

আত্রাইয়ের ভরতেঁতুলিয়া গ্রাম শুঁটকি তৈরিতে বিশেষভাবে খ্যাত। এ গ্রামের শতাধিক শুঁটকি ব্যবসায়ী এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত। শুধু বর্ষা মৌসুমে শুটকি তৈরি করে তারা পরিবারের সারা বছরের ভরণপোষণ নিশ্চিত করতেন। কিন্তু এবার মাছের অভাবে শুঁটকি তৈরি করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা হাতাশ হয়ে পড়েছেন। কাঁচা মাছের আমদানী কম, বাজাররে মূল্য বেশি অথচ শুঁটকির বাজারে ধস। সবকিছিু মিলিয়ে তাদের এবারে চালান প্রতি লাভের স্থলে গুনতে হচ্ছে লোকসান। 

এ সম্পর্কে ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের বিশিষ্ট শুঁটকি ব্যবসায়ী মঞ্জুর মোল্লা বলেন, ‘অন্যান্য বছর শুটকি বিক্রি করে আমরা যে পরিমান লাভবান হতাম। এবার ভরা মৌসুমে মাছ না পেয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছি। কাঁচা মাছের আমদানি কম, মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় আমরা এবার শুঁটকি তৈরিতে সাহসই পাচ্ছি না। এ পরিস্থিতে শুঁটকি তৈরি করলে প্রতি চালানেই আমাদের অনেক লোকসান হবে। এ জন্য অন্যান্যবার শুঁটকি মৌসুমে  শুঁটকি তৈরির যে ধুম পড়তো এবার তা নেই। অনেকটা আমরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।’

এ ব্যাপারে শুঁটকি ব্যবসায়ী রাম, মাজেদুল, পঁচু, গেদা ও ছাত্তার জানান, কয়েক বছরের মধ্যে গত বছর সব থেকে ভাল ব্যবসা হয়ছে। এবারে বন্যা না থাকায় নদী ও খালবিলে মাছের যথষ্টে অভাব। তাই এ র্পযন্ত তারা শুঁটকিতে হাত দিতে পারেনি। প্রতি বছর শুঁটকির আয় দিয়ে  সংসার পরিচালনা করা হতো। এবারে ব্যবসা না থাকায় তারা চরম উদ্বগ্নি হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে উপজলো সিনিয়র মৎস্য অফিসার আরোয়ার জামান বলেন, ‘যে সময় এ এলাকায় বেশি মাছের উৎপাদন হয় এবার সে সময় এলাকায় পানি সংকট ছিল। এ জন্য মাছের প্রজনন বাড়েনি। ফলে র্পযাপ্ত পরিমান মাছ বাজারে উঠছে না। তবে যতটুকু মাছ বাজারে উঠছে গতবারের তুলনায় অধিক মূল্য হওয়ায় শুঁটকি ব্যবসায়ীরা এ মাছ কিনতে পারছেন না। ’

Bootstrap Image Preview