মাদারীপুর প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা দেশের মানুষকে হত্যা করে সেই খুনি, দুর্নীতিবাজ, মানিলন্ডারিংদের সাথে ড. কামাল হোসেন হাত মিলিয়েছে। আওয়ামী লীগের নৌকা ছেড়ে ধানের শীষে যোগ দিয়েছে। বড় বড় কথা বলে আজ খুনিদের সাথে জোট করেছে কামাল হোসেন। যে গাঙ্গে পানি নেই সেই মরা গাঙে যোগ দিয়েছেন কিছু নেতা।
রবিবার (১৪ অক্টোবর) বিকাল সোয়া ৪টায় মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রবিবার সকালে মাওয়া প্রান্তের জনসভা শেষে দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে গিয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন, মূল নদী শাসন কাজ সংলগ্ন স্থায়ী নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধন, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের নামফলক উন্মোচন এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা ১ হাজার ৩৯০ মিটার ছয় লেন সড়কের কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছি। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে। কোন ঘর অন্ধকারে থাকবে না। বিএনপি'র আমলে দেশে খাদ্যের খাটতি ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে খাদ্য উৎপাদন কয়েকগুন বৃদ্ধি করেছে।
তিনি বলেন, দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। আগামীতে দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো সব মেটানো হবে। পদ্মা সেতুর সাথে সাথে রেল সংযোগ চালু হবে। দক্ষিঞ্চালের মানুষ ট্রেনে চলাচল করবে। পদ্মা সেতু থেকে বরিশাল হয়ে রেল যাবে পায়রা বন্দর পর্যন্ত। তথা সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ রেলে যাতায়াতের সুবিধা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য সমগ্র বাংলাদেশে আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরী করে দিয়েছি। আমরা চাই দেশের মানুষ এগিয়ে যাক। নদী ভাঙন থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য মেঘা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পদ্মা, আড়িয়াল খাঁসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নদী ভাঙন হয়েছে। এ নদী ভাঙন রোধ করবার জন্য ইতিমধ্যে নড়িয়ার জন্য ১২শ' কোটি টাকার প্রজেক্ট করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধসহ সমগ্র বাংলাদেশের নদী খনন করে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে, নদী শাসন করে, এই নদী ভাঙা যাতে বন্ধ হয় তার জন্য বিশাল প্রগ্রাম ডেল্টা প্লান আমরা নিয়েছি। যার মাধ্যমে শুধু নদী ভাঙন রোধ হবে না, খাদ্য উৎপাদন হবে, মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে চাই আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, খালেদা জিয়া এতিমদের কথা বলে বিদেশ থেকে টাকা এনে নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। আজ সেই এতিমদের টাকা মেরে খাওয়ার জন্যই কারাগারে যেতে হয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার করেছি, যুদ্ধপরাধীদের বিচার করেছি এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার হয়েছে।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুদ্দিন খানের সভাপতিতে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন- শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর-ই আলম লিটন চৌধূরী, মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।