পড়ার টেবিল থেকে থেকে রাজনৈতিক অঙ্গন সকল জায়গায় তার প্রতিভার ছোঁয়া। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্তরে ধরে রেখেছেন ফলাফলের পুরো স্কোর।সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৫১তম সমাবর্তনে বোটানিতে সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ৪ পাওয়া ছাত্রদের মধ্যে তিনি একজন। তিনি ক্যাম্পাসের প্রিয় মুখ শাহরিয়ার। পুরো নাম স, আ,ম শাহরিয়ার ইসলাম।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রতনাপালং গ্রামে বেড়ে ওঠা শাহরিয়ারের। পরিবারে তার বাবা, মা ছাড়াও রয়েছে আদরের একমাত্র ছোট বোন। প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ধাপে দিয়ে আসছেন মেধার পরিচয়।
২০১১-১২ সেশনে বোটানি বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫১ তম সমাবর্তনে ওই বিভাগে ফলাফলে সবার শীর্ষে অবস্থান করে নিয়েছেন তিনি। জিপিএ-৪ এর মধ্যে লাভ করেছেন ৪।
নিয়মিত ক্লাস করা, ক্লাসে মনযোগী থাকা, বাসায় লেকচার নোটে প্রতিনিয়ত চোখ বুলানো পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতির সবকাজগুলো তার ঠিকঠাকভাবে করতে হয়েছে সময়মতো। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চা খাওয়ার সময় তার সাথে কথা হয় বিডিমর্নিং-এর এই প্রতিবেদকের।
শাহরিয়ার বলেন, এইচ.এস.সি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ ৫ পাওয়ার দীর্ঘ সময় পর আবার এমন ভালো ফলাফল করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।
তিনি আরও বলেন, পড়াশোনার জন্য বাবা-মা, শিক্ষক এবং ভার্সিটির বড় ভাই সবার কাছ থেকে আমি উৎসাহ পেয়েছি।
ছোট বেলা থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন দেশের জন্য কিছু করবেন। আর সেই জন্য ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর পরই তিনি যোগ দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগে। এরপর তিনি নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার।
শাহরিয়ার বলেন, জীবনে একেক ধাপে একেক রকম চ্যালেঞ্জকে পার করতে হয়েছে। আমার জীবনে প্রথম সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া। তারপর এখানে ভর্তি হওয়ার পর লেখাপড়ার পাশাপাশি পরবর্তী নতুন চ্যালেঞ্জ হয় পুরো বাংলাদেশ। মানে দেশের জন্য কিছু করা। আর এখনো সেই লক্ষ্যেই আছি। তবে এখন তো ভার্সিটি জীবন শেষ করেছি তাই এখন আমার লক্ষ্য সেন্ট্রাল রাজনীতি করা।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? এমন প্রশ্নে তিনি বিডিমর্নিংকে বলেন, উচ্চতর লেখাপড়ার জন্য বিদেশে পড়তে যাওয়া এবং পাশাপাশি রাজনীতিটা চালিয়ে যাওয়া।
তিনি আরও বলেন, আমি দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আমি এখন থেকে প্রস্তুত হচ্ছি।
পড়ালেখায় ভালো করতে হলে আগে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে যে আমিই পারবো এবং আমাকেই পারতে হবে। তারপর এই বিশ্বাসকে আগলে রেখে একটু তো পরিশ্রম করতেই হবে। একাগ্রতা এবং ধৈর্য্য থাকতে হবে। ধৈর্য্য থাকলে সাফল্য আসবেই। আর পাশাপাশি দেশের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করতে হবে।
শাহরিয়ার ইসলাম শুধু ক্লাসেই নয় বন্ধু মহলেও রয়েছে তার বেশ জনপ্রিয়তা। বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দেয়া, ঘুরতে যাওয়া, খেলাধুলা এমনকি বন্ধুদের সুখে দুঃখে পাশে থাকতেও পিছ পা হননি তিনি।
বিশ্ববিদ্দালয়ের এই মেধাবী মুখ ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্লাটফর্ম যেখানে তুমি নিজেকে সবার সামনে মেলে ধরতে পারো ভালো কাজ করার মাধ্যমে। এমনকি নিজেদের যেকোনো ধরনের অদক্ষতা কাটিয়ে উঠা কিংবা ভাবনা বিকশিত হওয়ার জায়গাও এই বিশ্ববিদ্যালয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে থাকাকালে তুমি নিজেকে সবার সামনে মেলে ধরো তোমার ভালো কাজের মাধ্যমে। পরে যেন তোমাকে সবাই মনে রাখে যে ওই ছাত্র বা ছাত্রী আমাদের ভার্সিটির গর্ব।