Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘কমাতে হলে সম্পদের ক্ষতি, বাড়াতে হবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি’

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ১১:২২ AM
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ১১:২৩ AM

bdmorning Image Preview


আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস আজ।  ‘কমাতে হলে সম্পদের ক্ষতি, বাড়াতে হবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। 

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. অাবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

দিনটি উপলক্ষে বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এসব দুর্যোগের সংখ্যা ও মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে অগ্নিকাণ্ড ও দূষণজনিত মানবসৃষ্ট দুর্যোগ। এসব দুর্যোগ মোকাবিলা ও তার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দুর্যোগ-পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও দুর্যোগের সঠিক পূর্বাভাস প্রদানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক।’

দুর্যোগ-পূর্ব প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়সাধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন রাষ্ট্রপতি। এ ক্ষেত্রে নিজ নিজ কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মো. আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম দেশ হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) গ্রহণ করেন, যা সদ্য স্বাধীন দেশে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে একটি মাইলফলক।’

‘এরই ধারাবাহিকতায় দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০১৫, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১১, দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি হালনাগাদ ও তা বাংলায় অনুবাদের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় একটি শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া বাণীতে বলেন, ‘সরকার দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসকল্পে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। আমাদের সরকার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০), ধ্বংসস্তূপ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০১৬, দুর্যোগ-পরবর্তী মৃতদেহ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০১৬ প্রণয়ন করেছে।’

‘গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাসমূহে ২০৭৮ কিলোমিটার হেরিং বোন বন্ড করা হয়েছে এবং ১০৬৮ কিলোমিটার রাস্তার হেরিং বোন করার কাজ চলমান। দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে ত্রাণ গুদাম নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বন্যাপ্রবণ এলাকায় ২৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকায় ১০০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।’

এ ছাড়াও ৬৪৩টি বন্যা/ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ এবং গ্রামীণ জনপদে সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বজ্রপাত প্রশমনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই দেশে ৩১ লক্ষাধিক তালগাছ বীজ বপন করা হয়েছে। জাতীয় বিল্ডিং কোডে বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসমূলক কর্মসূচি প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সর্বপ্রথম তিনিই মুজিব কিল্লা নির্মাণের মাধ্যমে দুর্যোগে জনগণের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি ১৯৭৩ সালে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা দুর্যোগ সতর্কবার্তা প্রচার ও সাড়াদান কার্যক্রমে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।’

Bootstrap Image Preview