Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বান্দরবানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার ব্যাপক প্রস্তুতি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৪৯ PM
আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


বান্দরবান প্রতিনিধিঃ

প্রতি বছর শরৎকালে দেবী দুর্গার আগমন হয় নিজ ভূমিতে। সনাতন ধর্মের শাস্ত্র মতে জানা যায়, বছর ঘুরে আবারও উমা দেবী আসছেন তার বাপের বাড়ি। হিমালয়ের কৈলাশে তার স্বামী শিবের বাস। সেখান থেকেই সুদূর পথ পাড়ি দিয়ে আসেন সমতল ভূমির এই বাংলায়। সঙ্গে নিয়ে আসেন গণেশ, কার্ত্তিক, লক্ষ্মী আর সরস্বতীকে।

মা দেবীকে বরণ আর আরাধনায় মেতে উঠতে ইতোমধ্যেই জেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে পুজার মণ্ডপ তৈরি ও প্রতিমা তৈরি এবং সাজসজ্জার কাজ, আর তাই শেষ মহুর্তে ব্যস্ত সময় কাটাছে প্রতিমা শিল্পীরা। সনাতন ধর্মমতে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। এভাবেই মর্ত্যলোকে আবাহন ঘটে দেবী দুর্গার।

মন্দিরে মন্দিরে উচ্চারিত হয় 'যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমোঃ নমোঃ’। ষষ্ঠীপুজার মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু।

ঘনিয়ে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। জগৎ জননী মায়ের আগমনে মাতৃভক্ত সন্তানদের হৃদয়ে চলছে আনন্দধারা। এই আনন্দকে সবার মাঝে ভাগাভাগি করে নিতে সারা দেশের মতো পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও চলছে দুর্গোৎসবের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ।

স্থানীয় রাজার মাঠে দুর্গা পূজার প্রতিমাশিল্পীরা বলেন, সারা বছর আমরা এই দিনটির জন্য বসে থাকি। দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরী করে আমরা অর্থ উপার্জন করে পরিবার চালাতে হয়। কিন্তু দিনদিন আমাদের এই কাজের চাহিদা কমে যাচ্ছে, তাই এ কাজ করে পরিবার চালাতে আমাদের কষ্ট হয়ে যায়।

প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও আমরা বান্দরবানে দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরী করতে এসেছি। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা তৈরীতে সাজসজ্জায় অনেকটা পরিবর্তন এসেছে। উন্নতমানের রং, মাটি, কাপড়, গয়নাসহ প্রতিমা তৈরীর যাবতীয় উপকরণ উন্নতমানের হওয়ায় কাজ করতে আমাদের বেশ ভালই লাগছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, দুর্গাপূজার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে দুর্গা প্রতিমা। তাই মনমুগ্ধকর ও নিখুঁতভাবে কাজ ফুটিয়ে তুলতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে আমাদের। এদিকে, মা দেবীর বন্দনা উৎসব জমকালো করতে পেশাদার প্রতিমা শিল্পীদের পাশাপাশি রাত দিন খেটে প্রতিমা তৈরি, মঞ্চ সজ্জাসহ তোরণ নির্মানে সহযোগিতা করছে স্থানীয় তরুণরাও।

পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অমল কান্তি দাশ বলেন, বান্দরবান জেলায় এবার সব মিলিয়ে পূজামণ্ডপ হবে প্রায় ২৭টি। যার মধ্যে শুধু জেলা সদরেই আছে ১০টি। স্থানীয় রাজার মাঠেই হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় এবং আকর্ষণীয় মণ্ডপ। ব্যয় করা হচ্ছে প্রায় ২০ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুর্গাদেবীর প্রতিমা ছাড়াও তৈরি করা হচ্ছে নজর কারা বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমা। অনুষ্ঠান সুন্দর ও সফল করতে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিও সেরে নেয়া হচ্ছে। বান্দরবান জেলায় সবচেয়ে বড় পূজা অনুষ্ঠিত হবে শহরের প্রাণকেন্দ্র রাজার মাঠে, শুধু এই পূজা দেখার জন্য দক্ষিণ চট্রগ্রামের লোকেরা ও ভিড় জমায় এই পূজা মণ্ডপে।

বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার জানান, এবার বান্দরবান জেলায় সর্বমোট ২৭টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে যেন সনাতন ধর্মালম্বীরা সুষ্ট ও সুন্দরভাবে পূজা পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে সার্বক্ষনিক আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সাদা পোষাকদারী পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় শারদীয় দুর্গোৎসবের উদ্বোধন করবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই ডিজিটাল লাইটিংয়ের মাধ্যমে মহামায়ার আর্বিভাব ও দেবতা কর্তৃক অস্ত্র প্রদান প্রদর্শনী, আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের এই উৎসব ১৯ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

Bootstrap Image Preview