খুলনায় একটি নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রতারক দম্পতিকে। সোমবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- খুলনা মহানগরীর নিরালা আবাসিক এলাকার তানজিলা হাসান ঝুমা (২৪) ও তার স্বামী কাজী আব্দুল মুনিম। তাদের কাছ থেকে ১২টি সিমকার্ড, ৪০ পাতার ইন্টারনেট কপি ও একটি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা র্যাব-৬ এর কমান্ডার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, চার বছর আগে ওয়াজেদ আলী নামের এক ব্যক্তিকে আলী ক্লাবের মোড়ের তিনতলা বাড়ির নিচতলার একটি রুমে ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে নিয়ে যায় মুনিম ও তার স্ত্রী। সেখানে ওয়াজেদ আলীর সঙ্গে একটি মেয়েকে দিয়ে আপত্তিকর ছবি তোলে তারা। সেই সঙ্গে ২০ মিনিটের একটি ভিডিও ধারণ করে তাদের কাছে রেখে দেয়। পরে ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেবে বলে টাকা দাবি করে আব্দুল মুনিম। ওই সময় ওয়াজেদ আলীর চেক বইয়ের পাতায় জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে ব্যাংক থেকে আট লাখ টাকা তুলে নেয় মুনিম। পরে ওয়াজেদ আলীর ছেলে তৌহিদুজ্জামান সুমনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা আদায় করে। এছাড়া বিভিন্ন সময় ওয়াজেদ আলীর স্ত্রীকে ওই আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মুনিম ও তার স্ত্রী। সেই সঙ্গে ধাপে ধাপে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা আদায় করে প্রতারক স্বামী-স্ত্রী।
কমান্ডার মো. এনায়েত হোসেন আরও বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ওই ব্যবসায়ীর কাছে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে তারা। টাকা দিতে পারবে না বললে ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে আপত্তিকর ছবি পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে বিষয়টি স্থায়ীভাবে সমাধানের কথা বলে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
ওই দিন রাতে দুবার একটি মোবাইলের বিকাশ নম্বরে আরও ২০ হাজার টাকা পাঠান ব্যবসায়ী। এরপর প্রাথমিক দাবির ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। সেই সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর পুত্রবধূর ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি দিয়ে ধারণকৃত ভিডিও ইউটিউবে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে।
এ অবস্থায় খুলনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ওই ব্যবসায়ী। ডায়েরির কপিসহ র্যাব-৬ খুলনার কাছে একটি অভিযোগ দেন তিনি।
র্যাব কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, র্যাব -৬ এর কাছে অভিযোগ দাখিল করা হলে তথ্য ও প্রযুক্তি ও বিকাশ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বিষয়টি অনুসন্ধান করা হয়। পুরো ঘটনার সঙ্গে ওয়াজেদ আলীর ভায়রার ছেলে কাজী আব্দুল মুনিম ও তার স্ত্রী তানজিলা হাসান ঝুমার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এরপরই সোমবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এছাড়া তাদের সঙ্গে আরও ১০-১২জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।