Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

তিস্তায় সর্বস্ব হারানো বিধবার শেষ সম্বলও পুড়িয়ে দিল স্থানীয় নেতা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:০৫ PM
আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:০৫ PM

bdmorning Image Preview


লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

তিস্তা নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে দেবরের পৈত্রিক জমিতে ঘর তোলে বিধবা সালমা বেগম। শেষ সম্বল হারানো সেই বিধবার বসত বাড়িটিও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় আওামী লীগ নেতা।

শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া চৌরাহা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সালমা বেগম মৃত ইসমাইলের স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বসতভিটা হারিয়ে তিস্তা নদীর দ্বীপ চর আরাজি ছালাপাক গুচ্ছগ্রামে বসবাস করতেন ইসমাইল-সালমা দম্পতি। সরকারিভাবে পাওয়া গুচ্ছগ্রামের বসতবাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হলে অন্যের জমিতে মাথা গোজার ঠাঁই করেন তারা। এরপর স্বামী ইসমাইলের মৃত্যুতে একাকী হয়ে পড়েন বিধবা সালমা বেগম।

গত বছর পুনরায় তিস্তার ভাঙনে ভিটেমাটি হারান তিনি। এরপর একই এলাকার চৌরাহা গ্রামের দেবর ইচাহাক আলীর জমিতে একটি কুড়েঘর ও এক ছায়লা টিনের ঘরে সন্তানদের নিয়ে বসবাস শুরু করেন ওই বিধবা নারী। সেই জমি দীর্ঘদিন ধরে জবরদখলের চেষ্টা করছে পাশের হাজীপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মহিষখোচা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক। জমিটি নিয়ে উভয় পক্ষই আদালতে মামলা দায়ের করেন।

বিধবা সালমা বেগম জানান, কাজের সন্ধানে তার সন্তানরা ঢাকা শহরে চলে গেছে, তিনি এখনে একা থাকেন। এ সুযোগে শুক্রবার আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক সরকার শতাধিক বহিরাগত ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে হঠাৎ বিধবা সালমার বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর দুর্বৃত্তরা বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয়। স্থানীয়রা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। ততক্ষণে ঘর দু’টি ভস্মীভূত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, নদীর ভাঙনে বসতভিটা, সরকারিভাবে পাওয়া গুচ্ছগ্রামও বিলীন হয়ে গেছে। মাথা গোজার ঠাঁই নেই। তাই দেবরের জমির এক পাশে ঘর তুলে দিন যাপন করছেন তিনি। কষ্টে সাজানো সংসার হঠাৎ হামলা করে আগুনে ছাই করেছে সন্ত্রাসীরা। তিনি মানবাধিকার সংগঠনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সালমার দেবর ইচাহাক আলী জানান, বিধবা সালমার বসতভিটা তাদের পৈত্রিক জমি। এ জমি দীর্ঘদিন ধরে জবর দখলে চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক সরকার। স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকে বৈধ কাগজ দেখাতে না পরলেও ক্ষমতার জোরে জমি দখল করতে চান তিনি। তার হাত থেকে রক্ষা পেতে আদালতের আশ্রয়ও নিয়েছেন। আগুনে বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আদিতমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুত চলছে বলেও জানান তিনি।

ওই জমির মালিকানা দাবি করে মহিষখোচা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক সরকার জানান, এটা তাদের পৈত্রিক জমি। তবে ঘটে যাওয়ার ঘটনাটির সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন তিনি।

আদিতমারী থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছেন। তবে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Bootstrap Image Preview