Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ধানমন্ডিতে জীবন্ত ভাস্কর্য বনসাই প্রদর্শনী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:২৫ PM
আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:২৯ PM

bdmorning Image Preview


নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবার নয় এমন গাছেরও অস্তিত্ব রয়েছে। সে গাছ তার নিজ বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে ঠিকই তবে কৌশল অবলম্বন করে তার আকৃতি করে দেয়া হয়েছে ছোট। বলা হচ্ছে জীবন্ত ভাস্কর্য বনসাইয়ের কথা। ধারণা করা হয় আজ থেকে প্রায় ২০০০ বৎসর পূর্বে চীনে শুরু হয় এ বনসাই চর্চা। এর পর ধাপে ধাপে তা চীনের অন্যান্য অঞ্চল, জাপান, কোরিয়া ও ভিয়েতনামে বিস্তৃতি লাভ করে। দিনে দিনে তা নিয়েছে শিল্পের রূপ। এ শিল্প এখন শুধু চীন বা জাপানের নয়, আমাদেরও। দেশীয় নানা ধরনের বৃক্ষের বনসাই সৃষ্টির মধ্যদিয়ে এটি আমাদেরও নিজস্ব শিল্পের রূপ নিয়েছে। ছড়িয়ে গেছে শহর থেকে শহরে।

বাংলাদেশেও এখন উন্নত মানের বনসাই কালচার চালু রয়েছে। আমাদের দেশে যেসব সংগঠন বনসাইকে জনপ্রিয় করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ বনসাই সোসাইটি (বিবিএস) অগ্রগণ্য। তাদের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে ২০তম বনসাই প্রদর্শনীর শুরু হয়েছে। যাতে নান্দনিক সব বনসাই প্রদর্শিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ধানমণ্ডির ডব্লিভিএ অডিটোরিয়ামে চার দিনব্যাপী এ বনসাই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপান দূতাবাসের সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রধান মাচিকো ইয়ামামুরা ‘গেস্ট অব অনার’ এবং বিশিষ্ট অভিনেতা ও পরিচালক আফজাল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলী যাকের বলেন, ‘বনসাই এক জাদুকরী শিল্প। দশ আঙুলের পরিচর্যায় ছোট ছোট চারাগুলো বৃক্ষ হয়ে ওঠে। নানা ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে তারা শুভাশীষ জানায় দর্শনার্থীদের। শিল্পীর একাগ্রতা, মননশীলতা এবং পরিশীলিত রুচি আমাদের স্পর্শ করে। আমি বনসাই সোসাইটির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পেরে অপার আনন্দ লাভ করেছি।’

প্রদর্শনী সম্পর্কে সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুল হক বিডিমর্নিংকে বলেন- ‘১৯৯৯ সাল থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হবার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা বনসাই শিল্প নিয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশের প্রধান নগরীগুলোতে বনসাই এর পরিচিতি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি আমরা। প্রতিবছর আমাদের সদস্যরা নিরলসভাবে খেটে প্রদর্শনীগুলোকে সার্থক করে। আমাদের এ প্রদর্শনীগুলোর উদ্দেশ্য অন্যসকল গাছ প্রেমীদের উৎসাহিত করা, তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি করা।’

সংস্থাটির সদস্য শহিদুল হাসান বিডিমর্নিংকে বলেন- ‘ বনসাই চর্চা, এটা মূলত একটা আর্ট। বনসাই তৈরী করতে বা এর চর্চা করতে শৈল্পিক মন, মেধা ও অসীম ধৈর্য্যের দরকার হয়। সঠিক কৈশল আর পরিচর্যার মাধ্যমে ছোট ছোট চারাগুলোকে বৃক্ষে রূপান্তর করা যায়। এ কাজটা আমার জন্য সত্যিই অনেক আনন্দদায়ক। প্রকৃতিকে উপলব্ধি করা যায়।’

উক্ত প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে শতাধিক বনসাই। মাত্র দেড় হাজার থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা মূল্যের বনসাইও আনা হয়েছে প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনীতে ঠাঁই পাওয়া বনসাইয়ের মধ্যে রয়েছে- বট, চায়না বট, কামিনী, চেরি, পাকুর, অশ্বত্থ, তেঁতুল, হিজল, করমচা, শেওড়া, ফাইকাস, ফুকেনটি, জুনিপার, সাফেলারা, ঝাউ, পাতাবাহার, কাটা মেহেদী, তমাল, ছিটকি, সাফেলরাসহ দেশি-বিদেশি নানা বৃক্ষ।

উল্লেখ্য, ধানমণ্ডির ডব্লিভিএ অডিটোরিয়ামে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ বনসাই প্রদর্শনী চলমান থাকবে। বৃক্ষপ্রেমী যে কেউ প্রদর্শনী থেকে বনসাই সংগ্রহ করতে পারবেন।

Bootstrap Image Preview