Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আশুরার দিন রোজা রাখার ফযিলত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৪৬ AM
আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৪৭ AM

bdmorning Image Preview


 

আশুরা দিনের করণীয় আরবি প্রথম মাস হচ্ছে মহরম আর মহরমে ১০ তারিখকে বলা হয় আশুরা। ইসলামে এই দিনটিকে বলা হয় ইয়াউমুল আশুরা। এই দিনে নির্মমভাবে শহীদ হন নবী (স.)-এর আদরের নাতি হজরত হোসাইন (রা.)। এ ছাড়া আরো অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা দিনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ কারণে পবিত্র আশুরার দিনটি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ।

হাদিস শরিফে মহররম মাসের ফজিলত এবং এ মাসের ১০ তারিখ আশুরার রোজা সম্পর্কে রাসুল (স.) থেকে বর্ণিত একাধিক হাদিস রয়েছে। পবিত্র কোরআনের সুরা তওবার ৩৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক চারটি মাসকে সম্মানিত উল্লেখ করে এ মাসগুলোয় পরস্পর অন্যায় ও অবিচার থেকে বিরত থাকতে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন।

রাসুল (স.) বলেছেন, রমজানের রোজার পর মহররম মাসের রোজা আল্লাহপাকের কাছে সবচেয়ে বেশি ফজিলতময় (মুসলিম)। রাসুল (স.) নিজে মক্কায় থাকাকালে আশুরার দিন রোজা রাখতেন মদিনায় হিজরতের পর যখন তিনি ইহুদিদের এ মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখতে দেখলেন, তখন তিনি এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন।

ইহুদিরা জানায়, এ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহপাক মুসা (আ.)-কে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। এ তারিখেই ফেরাউন ডুবে মরেছিল। হজরত মুসা নবী (আ.) এ দিনটিতে রোজা রাখতেন। রাসুল (স.) বললেন, আমরাও মুসা নবী আলাইহিস সালামের অনুসরণ করব। তোমাদের চেয়ে আমাদের অধিকার বরং বেশি। তিনি তখন থেকে মহরমের ১০ তারিখ রোজা রাখা শুরু করেন এবং সবাইকে নির্দেশ দেন (বুখারি)।

রাসুল (স.) বলেছেন, এই আশুরার দিন রোজা রাখার কারণে আল্লাহপাক বান্দার বিগত এক বছরের গোনাহগুলো মাফ করে দেন (মুসলিম)।

মুসলিম শরিফের বর্ণনায় জানা যায়, ইন্তেকালের আগের বছর রাসুল (স.) ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, যদি আমি আগামী বছর বেঁচে থাকি তবে ৯ তারিখেও রোজা রাখব। এ জন্যই আশুরার রোজার সঙ্গে সঙ্গে এর আগের দিন রোজা রাখাকে মুস্তাহাব বলেছেন উলামায়ে কেরাম।

হাদিস বিশারদ হাফেজ ইবনে হাজার হজরত ইবনে আব্বাসের বর্ণনা উল্লেখ করেছেন, যাতে রাসুল (স.) বলেছেন, তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখো। তবে এতে যেন ইহুদিদের সঙ্গে সামঞ্জস্য না হয়ে যায়। এ জন্য এর সঙ্গে মিলিয়ে হয়তো আগের দিন কিংবা পরের দিনসহ রোজা পালন করো।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলে পাক (স.) ইরশাদ করেন, তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখো এবং এ ব্যাপারে ইহুদিদের বিপরীত করে তৎসঙ্গে আশুরার আগে বা পরে আরো একটি রোজা পালন করবে। অর্থাৎ ইহুদিরা রোজা রাখে মহরমের ১০ তারিখ। কিন্তু মুসলমানদের সঙ্গে ইহুদিদের রোজা মিল না হওয়ার জন্য মুসলমানরা হয়তো ৯ ও ১০ তারিখ অথবা ১০ ও ১১ তারিখ দুটি রোজা পালন করবে। আশুরা দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বমান নিবন্ধে আলোচিত হাদিস ও ঘটনাবলি দ্বারা সহজেই অনুমেয়।

এর গুরুত্ব ও ফজিলত কারবালার ঘটনার বহুকাল থেকেই বিদ্যমান। কিন্তু রূঢ় হলেও সত্য, ঐতিহাসিক ঘটনাবলি না জানার কারণে শিয়াদের মতো সাধারণ মুসলমানরাও আশুরার দিনকে শুধু কারবালার বেদনাদায়ক ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আসল ফজিলত ও মর্যাদা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।

পবিত্র আশুরার করণীয় কাজগুলো সম্পাদন করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর কর্তব্য। আশুরার দিনে নফল নামাজ, তেলাওয়াতে কোরআন, রোজাদারদের ইফতারি করানো এবং সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবার-পরিজনদের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণ খরচ করাও সওয়াব। এ ছাড়া এই দিন নিজের গুনাহ ও পাপ কাজের জন্য বিনয় সহকারে বেশি বেশি করে তাওবা করা। কারণ এ মাসে তাওবা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

Bootstrap Image Preview