Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সৌদি আগ্রাসনে দুর্ভিক্ষের মুখে ইয়েমেনের ‘৫২ লাখ শিশু’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:১৬ PM
আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:১৬ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: ইন্টারনেট


যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনের ১০ লাখ শিশু নতুন করে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়েছে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসনের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এই দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে মত দিয়েছে তারা।

সেভ দ্য চিলড্রেন-এর নতুন এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মুহূর্তে সবমিলে ৫২ লাখ ইয়েমেনি শিশু দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধাবস্থার কারণে রসদ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় খাদ্যাভাব নজিরবিহীন পর্যায়ে চলে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে নতুন ওই প্রতিবেদনে।

বিবিসি জানিয়েছে, যুদ্ধের কারণে বাড়তে থাকা খাদ্যমূল্য ও ইয়েমেনি মুদ্রার অব্যাহত দরপতনে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকির মধ্যে পড়া পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সঙ্গে আরও একটি হুমকি যুক্ত হয়েছে।

নতুন এক প্রতিবেদনে ব্রিটেনভিত্তিক সংস্থাটি জানিয়েছে, লোহিত সাগরের হোদেইদা বন্দর দিয়ে পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে দুর্ভিক্ষের তীব্রতা অবর্ণনীয় হয়ে দেখা দিতে পারে।

দেশটির বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকাগুলোতে পাঠানো ত্রাণের অধিকাংশই প্রধান সমুদ্র বন্দর হুদেইদাহের মধ্য দিয়ে ওই এলাকাগুলোতে যায়। কিন্তু হুদেইদাহের চারপাশে চলা লড়াইয়ের কারণে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সরবরাহ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এতে বিদ্যমান পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

  

ইয়েমেনে এখন মোট ৫২ লাখ শিশু দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন বলে জানিয়েছে শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাটি।

“লাখ লাখ শিশু জানে না পরবর্তী খাবারটি কখন পাবে অথবা আদৌ পাবে কি না। উত্তর ইয়েমেনের (বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত) একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেখানে শিশুদের কান্না করারও শক্তি নেই, ক্ষুধায় তাদের দেহ অবসন্ন হয়ে গেছে,” বলেছেন সেইভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী হেল থর্নিং-শ্মিট।

“এতে ইয়েমেনি শিশুদের পুরো এক প্রজন্মকে ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যারা বোমা থেকে শুরু করে ক্ষুধা ও প্রতিরোধযোগ্য রোগ, যেমন কলেরার মতো বহুমাত্রিক হুমকির সম্মুখীন,” বলেছেন তিনি। 

চলতি মাসের প্রথমদিকে সেইভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছিল, চলতি বছর এ পর্যন্ত তারা তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় চার লাখ শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছে।

চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই ৩৬ লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বেসরকারি এই সংস্থাটি।

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ইয়েমেনের যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার লোক নিহত হয়েছে যাদের দুই-তৃতীয়াংশ বেসামরিক আর আহত হয়েছে আরও ৫৫ হাজার লোক।

২০১৫ সালের প্রথমদিকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানাসহ দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ অঞ্চল দখল করে নেয়। এতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মনসুর হাদি দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান সমর্থিত আরেকটি শিয়া গোষ্ঠীর উত্থানের সম্ভাবনায় শঙ্কিত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আরও সাতটি আরব দেশ হাদিকে ফের ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্য সামনে রেখে হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করলে ইয়েমেনজুড়ে লড়াই ছড়িয়ে পড়ে।

Bootstrap Image Preview