শেকৃবি প্রতিনিধি:
সমুদ্রের পানিতে জন্মানো পুষ্টিগুণে ভরপুর স্পেরুলিনা এবার চাষ করা যাবে বাড়ির ছাদেই। এমনটি দাবি করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের একদল গবেষক। প্রায় এক বছর ধরে গবেষণার পর দেশে প্রথম এ সাফল্য পায় তারা।
স্পেরুলিনা এক ধরণের শৈবাল। এটিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, লৌহ ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। গুণাগুণের কারণে একে সুপার ফুড বলা হয়। দেশে স্পেরুলিনা ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার হলেও ভেজিটেবল হিসেবে এটিই প্রথম।
গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিন বিডিমরনিং'কে বলেন, আমরা ল্যাবে গবেষণার পর মাত্র ১/২ কেজি প্রোডাক্ট নিয়ে ছাদে ৯৬টি বাকেটে এর চাষ করি এবং ভাল ফলাফল পাই। থাইল্যান্ড থেকে আনা বাকেটগুলোর দাম বেশি হওয়ায় আমরা দেশের তৈরি আরএফএলের ফুডগ্রেডেড বক্স ব্যবহার করে খরচ দশ ভাগের এক ভাগে কমিয়ে এনেছি। বর্তমানে প্রতিটি ড্রাম থেকে আমরা ১৫ গ্রাম করে পাচ্ছি।
পুষ্টিগুণের কথা জানতে চাইলে ড. জামাল বলেন, ১০০ গ্রাম স্পেরুলিনায় ৩৭৪ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায় এবং ৫৮২ গ্রাম কলিজার সমপরিমাণ লৌহ পাওয়া যায়। এতে দুধের চেয়ে ১৬% এবং গরুর মাংসের চেয়ে ৩০% বেশি ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এটি গর্ভপতি, বন্ধ্যা ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। তা ছাড়া অকাল বৃদ্ধ রোধ, বয়স্ক জনিত রোগ, স্কিন ভাঁজ রোধ ও প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া এটি শরীরের হ্যাবিম্যাটার ও পাথর দূর করতেও সাহায্য করে। তবে নেই কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এমন পুষ্টিগুনের কারণে বিজ্ঞানীরা এটিকে ফিউচার বা মিরাকল ফুড বলে থাকে বলে জানান তিনি।
গবেষকরা জানান, স্পেরুলিনার কোন স্বাদ বা গন্ধ নেই, তাই শুকিয়ে গুড়া করে যে কোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। তবে কাঁচা অবস্থায় এর পুষ্টিগুণ বেশি।
পৃথিবীর অনেক দেশেই এটি ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হলেও আমাদের দেশে এর ব্যবহার দেখা যায় না। সূর্য্যের আলো এখানে মূখ্য বিষয় হওয়ায় বাড়ির ছাদে স্পেরুলিনা চাষ খুলে দিতে পারে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার। এমনটিই আশা গবেষকদের।