Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সংলাপের মাধ্যমে জাতীয় সনদ প্রণয়নের পরামর্শ’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:০৭ AM
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪৩ AM

bdmorning Image Preview


অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নেতৃবৃন্দ। তারা মনে করেন, রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে দ্রুততার সাথে সংলাপ আয়োজন এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও স্বাক্ষর হওয়া দরকার।

রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সুজন এর উদ্যোগে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

সুজন’র সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে এতে অংশ নেন, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক সি আর আবরার এবং ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, রাজনীতিবিদ এ এস এম আকরাম, জোনায়েদ সাকী।

দলীয় সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় না, এর বিরুদ্ধেও সোচ্চার হওয়া দরকার বলে জানিয়ে এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য আরপিওসহ বিভিন্ন আইনের সংশোধন হওয়া দরকার। কিন্তু সেগুলো হওয়া উচিৎ রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে। কিন্তু আমরা দেখলাম নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করে নির্বাচনে ইভিএম-এর প্রয়োগ নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। এটি প্রয়োগ করতে হলে এর কারিগরি দিক নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়া দরকার এবং এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হওয়া দরকার।

এসময় ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা জানি, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নির্ভর করে একটি যথাযথ নির্বাচনী আইন ও এর কঠোর প্রয়োগের ওপর। আমরা দেখতে পেয়েছি যে, নির্বাচন কমিশন ইভিএমসহ অনেকগুলো বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারের মতামত উপেক্ষা করে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে না জানিয়ে আরপিওতে সংশোধনী আনার জন্য কতগুলো প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে। তাই নির্বাচনে জিতে আসতে সরকার 'উইপেনাইংজিং অব লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক' বা আইনের অস্ত্রীকরণ করছে কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।'

সিটি নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, 'সরকার চাইলেই কেবল সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। অর্থাৎ সরকার চাইলে প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকারকে সহায়তা করতে বাধ্য হবে।' স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের জন্য ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের বিধান তুলে দেয়া দরকার।'

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা নাগরিকেরা যেন ভোট দিতে পারি সেই নিশ্চয়তা চাই। আমরা মনে করি, সভ্য সমাজে সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস থাকতেই হবে।' ভোট এখন চুরির বিষয়, ডাকাতির বিষয়ে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসময় দলীয় সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

ড. সি আর আবরার বলেন, 'আজকে সবাই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও আমরা আমাদের গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়নি এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া পরিচ্ছন্ন হয়নি। আজকে জনগণের পক্ষে কেউ ঐক্যবদ্ধ হলে রাজনৈতিকভাবে তার জবাব না দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। সরকার যদি উন্নয়ন করে থাকে তাহলে তাদের এত ভয় কেন? একজন উদ্বিঘ্ন নাগরিক হিসেবে আমি চাই, আমি যেন আমার ভোট দিতে পারি, মানুষ যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে এবং শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার হস্তান্তর হয়।'

এ এস এম আকরাম বলেন, 'বর্তমানে সরকার যেভাবে চায় সেভাবেই আইন তৈরি হয়। তাই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের সদিচ্ছা না থাকলে যত আইনই করা হোক সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।' নির্দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Bootstrap Image Preview