Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

দিনে দর্জি, রাতে ভয়ঙ্কর খুনি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৫৬ PM
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৫৬ PM

bdmorning Image Preview


দিনের বেলা দর্জির দোকানে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করেন ছোট্ট এক দোকানে সারাদিন সেলাই মেশিনে বসেই কেটে যায় দিন কিন্তু তার এই রূপের পরিবর্তন ঘটে রাতে দর্জি থেকে রাতে ভয়ঙ্কর খুনির রূপ ধারণ করে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা আদেশ খামরার ভয়ঙ্কর এই খুনিকে গ্রেফতার করেছে ভারতের পুলিশ

সেলাই মেশিনের সুই থেকে হাতে উঠে তার কুঠার, রশি কখনো নেশাজাতীয় দ্রব্য অথবা মদ শুরু হয় হত্যাযজ্ঞ ঘটনার শুরু ২০১০ সালে প্রথম হত্যাকাণ্ড অমরাবতি জেলায়, দ্বিতীয়টি নাশিকে তখন থেকে অন্তত ৩৩ জনকে হত্যা করেছে আদেশ

এরপর থেকে মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ বিহারের বিভিন্ন সড়কের পাশে মাঝে মাঝেই লাশের টুকরা পড়ে থাকতে দেখা যায় তবে সব হত্যাকাণ্ডে একটি মাত্র আলামত পাওয়া যায়; আর সেটি হচ্ছে যাদের হত্যা করা হয়, তারা সবাই পেশায় ট্রাক চালক অথবা চালকের সহকারী

কিন্তু কেউই কখনো কল্পনা করতে পারেনি যে, মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার মন্দিদ্বীপ এলাকার অত্যন্ত সদালাপী এক দর্জি নৃশংস এসব হত্যাকাণ্ডের হোতা এলাকায় বিনয়ী দর্জি হিসেবে পরিচয় আছে তার

অবশেষে গত সপ্তাহে স্থানীয় পুলিশ যখন খামরাকে গ্রেফতার করে; তখন তার কাছে ৩০ জনকে হত্যার স্বীকারোক্তি শুনে পুলিশ স্তব্ধ হয়ে যায় পরে মঙ্গলবার খামরা জানায়, সে আরো তিনজনকে হত্যা করেছে; সব মিলিয়ে ৩৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে

ভারতের সিরিয়াল কিলারদের তালিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খুন করেছে আদেশ এর আগে কলকাতার রামান রাঘব ৪২ জনকে হত্যা করেছিলেন
সম্প্রতি রাজ্যে দুই ট্রাক চালক খুন হন ঘটনার তদন্তভার পরে এসপি বিট্টু শর্মা লোধা রাহুল কুমারের ওপর ভারতের কুখ্যাত এই সিরিয়াল কিলারকে গ্রেফতারের আগে তাদের হাতে কোনো ক্লু ছিল নাগ্রেফতারের পর আদেশ খামরা বলেছে, ‘কষ্টপূর্ণ জীবন থেকে চালকদের পরিত্রাণ দিতেই খুন করতো সে

আদেশের সহযোগী অভিযুক্ত জয়করণ সে পুলিশকে বলেছে, ‘তারা যখন আদেশের কাছে জানতে চাইতেন কেন ট্রাক চালককে হত্যা করছে সে তখন অট্টহাসিতে ফেটে পড়তো বলতো, তাদেরকে আজীবনের জন্য পরিত্রাণের নিশ্চয়তা দিচ্ছে সে

সিরিয়াল এই কিলার হাসতে হাসতে বলতো, ‘চালকরা অত্যন্ত কষ্টের মাঝে জীবন-যাপন করে আমি তাদের মুক্তি দিচ্ছি, তাদের যন্ত্রণা থেকে রেহাই দিচ্ছি

দেশটির ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি মন্দিদ্বীপে আদেশ খামরার এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে স্থানীয়রা আদেশের নৃশংস রূপের তথ্য শুনে কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এক প্রতিবেশী বলেন, ‘সে খুবই শান্ত মানুষ, সদা ভালো আচরণ করে তার হাতে যে অনেক মানুষের রক্ত লেগে আছে এটি কেউই বিশ্বাস করবে না

ভোপাল পুলিশের মহাপরিদর্শক ধর্মেন্দ্র চৌধুরী বলেন, ৪৮ বছর বয়সী খামরা খুব সহজেই মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে পারে সে এটাকে ব্যবহার করে ট্রাক চালকদের বন্ধু বানাতো এবং ফাঁদে ফেলতো

তার সহযোগীরা যখন ট্রাকের সবকিছু লুটে নিতো, তখন সে পাশে বসে রশি পেচিয়ে চালককে শ্বাসরোধে হত্যা করতো তবে মাঝে মধ্যে বিষপ্রয়োগ করেও হত্যা করতো এছাড়াও আরো বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতো সে ট্রাক চালকদের ফাঁদে ফেলার জন্য সে মদ্যপান করাতো পরে চালককে হত্যার পর নগ্ন করে লাশ টুকরা টুকরা করতো পরে কোনো সেতুর নিচে অথবা পাহাড়ি রাস্তার পাশে বিভিন্ন এলাকায় ফেলে দিতো

খারমাকে জিজ্ঞাসাবাদকারী এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এভাবে মধ্যপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, বিহার ঝারখণ্ডে লাশের টুকরা পাওয়া যেতো এই টুকরাগুলো এক করে লাশ শনাক্ত করতে পুলিশকে প্রচণ্ড বেগ পেতে হতো এই সংঘবদ্ধ চক্র ছিল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর আমরা জানি কত মানুষকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে এই খুনিরা

Bootstrap Image Preview