Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

নারী হিসাবে আমরা পুলিশের কাছে গেলে বাধার সম্মুখিন হই; শবনম আজিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৪৭ PM
আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


‘জনপরিসরে নারীরা যে যৌন হয়রানির শিকার হয় তার ঐতিহাসিক ভিত্তি হচ্ছে পিতৃতন্ত্র এবং আমাদের সংস্কৃতি। সিডও সনদে ব্যক্তিজীবন এবং পাবলিক সেক্টর সকল ক্ষেত্রেই নারীর মানবাধিকারের কথা বলা হয়েছে। নারী-পুরুষের একটি বৈষম্য তৈরি হয় যেখানে মূল কারণ হল পারিবারিক শিক্ষা এবং কারিকুলা শিক্ষা। তাই কারিকুলাকে জেন্ডার সংবেদনশীল করতে হবে। মিডিয়া হাউজকে নিজের অবস্থান থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের জন্য কাজ করতে হবে।’ বলে মন্তব্য করনে বাংলাদশে মহলিা পরষিদরে সভাপতি আয়শা খানম।

গত ৩ সেপ্টেম্বর ছিল আন্তর্জাতিক সিডও দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে আজ ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ মঙ্গলবার বিকেল ৩:৩০ টায় সংগঠনের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তন, সুফিয়া কামাল ভবন, ১০/বি/১ সেগুন বাগিচায় “জনপরিসরে নারীর প্রতি সহিংসতা নারীর মানবাধিকার লংঘন: প্রেক্ষিত সিডও” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির বক্তব্য উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা। সভায় প্রস্তাব পাঠ করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্তর্জাতিক উপ-পরিষদের সদস্য লুনা নূর। সভাটি পরিচালনা করেন সংগঠনের পরিচালক অ্যডভোকেসি এন্ড লবি জনা গোস্বামী।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আয়শা খানম। তিনি বলেন, নারীর জীবনে নিরাপত্তা এবং ব্যাক্তিজীবনে নারীরা যে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে তা সিডওর প্রেক্ষিতে এই আলোচনার বিষয়বস্তু। বর্তমান প্রজন্মকে সিডও বিষয়ে জানানো জন্য আরো পদক্ষেপ নিতে বলে তিন উল্লেখ করেন।

ডিএমপি যুগ্ম পুলিশ কমিশনার জনাব মফিজ উদিদ্দন আহমেদ পিপিএম বলেন, 'সাম্প্রতিক কালের ছাত্রদের যে আনেদালন চলছলি তাতে ছাত্র এবং ছাত্রীরা সবাই রাস্তায় নেমেছিল যার মূল লক্ষ ছিল অনিয়মকে ভেঙ্গে নিয়ম প্রতিষ্ঠা করা। আমরা যদি রাস্তগুলোকে হকারমুক্ত করতে পারতাম, পরিবহন ব্যবস্থা যদি ভাল করতে পারতাম, রাস্তা-ঘাট যদি ভাল করতে পারতাম তাহলে তা জনগণের জন্য ভাল হত এবং নারীর প্রতি সহিংসতা অনেকাংশে কমতো।' 

তিনি আরও বলনে, ঢাকা শহরে গণপরিবহনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। যেভাবে আমরা চলাফেরা করি তাতে নারীদের সমস্যা বেড়ে চলছে। সকলের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পুলিশ যদি নিজেদের দায়িত্ব ভালবাবে পালন করে তাহলে দেশে অনেক উন্নতি সাধিত হবে। তিনি আশা করেন বর্তমনের জনপরিসরে এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারবো।

শবনম আজিজ, (সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) বলেন, 'পুলিশের কাছে নাগরিক হিসেবে সুরক্ষার জন্য আমাদের চাওয়ার অনেক কিছু। কিন্তু নারী হিসাবে আমরা পুলিশের কাছে গেলে বাধার সম্মুখিন হই। শুধু পুরুষ নয় আমরা অনেক নারীই পিতৃতন্ত্রিকতার বলয়ে বাস করি। তাই আমাদের আচরণ পরিবর্তন করতে হবে নারীকে নারী নয় মানুষ ভাবতে হবে। ধর্ষণ হলে এবং তারপর হত্যা করা হলে তাকে আমরা সহিংসতা বলি। বাচনিকভাবেও নারীরা ক্রমাগত সহিংসতার শিকার হয় কিন্তু তাকে সহিংসতা মনে করা হয় না। তাই প্রয়োজন মানসিকাতর পরিবর্তন।' 

তিনি আরও বলনে, জনপরিসর শুধুমাত্র জনপরিসর নয় ভার্চুয়াল জগতেও জনপরিসর আছে। যেখানে নারীরা ক্রমাগত সহিংসতার শিকার হয়। গাজিপুর টাঙ্গাইল থেকে উত্তরা এই রুটটি সবচেয়ে ভয়াবহ রুট হিসাবে পরিণত হয়েছে। যেখানে বারে বারে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। শ্রেনী বৈষম্য নারীর প্রতি সহিংসতার একটি কারন। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতার প্রয়োজন। গণমাধ্যমে নারী সহকর্মীরাও নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হন কিন্তু সেই বিষয়গুলো আলোচনায় আসে না। আমরা প্রতিবাদের ভাষা বন্ধ করে দিয়েছি। সিডও আমাদের অনেক ধরনের সুযোগ দিয়েছে। নারী নয় একজন মানুষের অধিকার কতটুকু তা বুঝতে হবে এবং সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

সভায় সংগঠনের অন্যতম সহ-সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ, সীমা মোসলেম, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগমসহ সংগঠনের সম্পাদক মন্ডলী এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার নেত্রীবৃন্দ ও সাংবাদিকসহ প্রায় ৭০ জন উপস্থিত ছিলেন।

Bootstrap Image Preview