Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ মঙ্গলবার, মার্চ ২০২৪ | ৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

দালাল ছাড়া কোন কাজই হয় না পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩১ PM
আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩১ PM

bdmorning Image Preview


রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ

সন্ধা হলেই লো-ভোল্টেজ। বিদ্যুৎ বিতরণ ও নতুন সংযোগ নিতে দালাল ছাড়া কাজ না হওয়াসহ গ্রাহক হয়রানীর বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন রানীশংকৈল সাব-জোনাল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, এ অফিস রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে ২০১৬ সাল থেকে। সে-সময় থেকেই অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ইন্ধনে দালাল ভিড়তে শুরু করে বিদ্যুৎ অফিসে।

অভিযোগ রয়েছে, অফিসের ক্যাশ কাউন্টারে একজন গ্রাহক নতুন মিটার সংযোগ নেওয়ার আবেদন জমা দিলে সে আবেদনের মূল কপি চলে যায় দালালদের কাছে। দালালরা ওই আবেদনের কপি নিয়ে যোগাযোগ করে গ্রাহকের সাথে। গ্রাহক তার জমা দেওয়া আবেদনের কপি দালালদের নিকট দেখে বিশ্বাস করে ফেলে অফিসের লোক হিসেবে। এ কারণেই তারা তখন দালালদের খপ্পরে পড়ে।

এ ছাড়া অফিসারদের ঘুষ আনুসাঙ্গিক খরচের ভাউচার দেখিয়ে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে চুক্তি করে ৬/৭ হাজার টাকায় মিটার সংযোগ করে দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দিলে জীবনে সংযোগ না হওয়ার হুমকি দেওয়া হয় গ্রাহকদের। আবার টাকা দিয়ে দালালের নাম না বলার অঙ্গীকারও থাকে। দালালের সাথে চুক্তির কিছুদিন পরেই চলে যান অফিসের ওয়ারিং পরির্দশক আবেদনকৃত গ্রাহকের বিদ্যুতের স্থান পরির্দশন করতে। আর এ কারণেই একজন গ্রাহক বিশ্বাস করে ওই দালালকে। যদিও পল্লীবিদ্যুৎ এর নিয়ম অনুযায়ী আবাসিক সংযোগের জন্য খরচ ৫৫০ আর বাণিজ্যিকের জন্য ৯৫০ টাকা বলে জানা যায়।

সম্প্রতি সরজমিনে ঘুরে কথা হয় একাধিক হয়রানীর স্বীকার গ্রাহকের সাথে। রানীশংকৈল উপজেলার চন্দন চহট গ্রামের আব্দুস সালাম দালালের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমি ২ মাস আগে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য অফিসে জমির দলিলের ফটোকপিসহ আবেদন ক্যাশ কাউন্টারে জমা দিয়ে ১ শত টাকার মানি রিসিভ নিয়ে আসি এর দুইদিন পরেই একজন দালাল আমার আবেদন করা কাগজ নিয়ে আমার সাথে দেখা করেন। বলেন আপনার সংযোগের স্থান দেখতে স্যার আসবে। তাই স্যারকে চা খরচ দেওয়াসহ আপনার মিটার নিতে খরচ হবে ৬ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, আমি অফিসে আবেদনকৃত কাগজ দেখে তাকে বিশ্বাস করে কিছু টাকা দেয়। এর পরের দিনে ঠিকই অফিসের লোক এসে আমার বাসা দেখে গেছে। এরপরে ওই দালাল আমার কাছে চুক্তি অনুযায়ী সমস্ত টাকা নিয়ে গেলেও সংযোগ এখনো আমি পাইনি। এমনি অভিযোগ রয়েছে উপজেলার রাতোরের সালাম বনগাওয়ের জসিম পকম্বার জব্বারসহ অনেকের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, বকেয়া শিটগুলো দালালদের হাতে দিয়ে সংযোগ কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গ্রাম-গঞ্জ থেকে অনিয়মভাবে টাকা তুলে আত্মসাৎ করার। এ বিষয়ে অফিসে অভিযোগ করলে তাদের বক্তব্য থাকে রিসিভ ছাড়া টাকা দেবেন না। পাল্টা যদি প্রশ্ন করা হয় তাহলে তাদের কাছে বকেয়া শিট কিভাবে গেলো এ বিষয়ে তারা এড়িয়ে যায়।

আরো অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহকদের ভৌতিক বিলসহ গ্রাহকের বাড়িতে বিলের কপি না দিয়ে হয়রানী করার।

এদিকে বিদ্যুৎ অফিসের ওয়ারিং পরির্দশকরা সব সময় ইলেকট্রিশিয়ানদের সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়ান। এ সুযোগে ইলেকট্রিশিয়ানরাও দালালি করে মানুষের নিকট অনৈতিকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের নামে বিপুল অর্থ আদায় করে থাকেন।

এ ছাড়াও ওয়ারিং পরির্দশকরা বিভিন্ন গ্রাউন্ডিং রডের কোম্পানিদের সাথে চুক্তি করে নিন্মমানের রড গ্রাউন্ড করে মানুষকে ধোকা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সব মিলে দালাল ছাড়া কোন কাজই হয় না বিদ্যুৎ অফিসে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার এহতেসামুল বলেন, বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র সমস্যা হওয়ায় বিদ্যুতের ভোল্টেজ কম। আর এ অভিযোগগুলো আমাদের দেখার সুযোগ নেই।

Bootstrap Image Preview