কবির আল মাহমুদ ,মাদ্রিদ (স্পেন) প্রতিনিধি :
স্পেনের স্হানীয় অধিবাসীদের মতো প্রবাসীরাও অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন গ্রীষ্মের (সামার) জন্য। দীর্ঘ শীতের জীর্ণতা ও নিরবতা কাটিয়ে প্রকৃতি যেমন এসময় নিজেকে মেলে ধরে, ঠিক তেমনি প্রবাসীরাও মেতে ওঠেন বিভিন্ন আনন্দ আয়োজনে। এরই ধারাবাহিকতায় স্পেনে বসবাসরত কুমিল্লা প্রবাসী মেতে উঠেছিলেন বনভোজন ও সমুদ্র সৈকত ভ্রমনে।
কুমিল্লা সমিতি, মাদ্রিদ স্পেনের উদ্যোগে গত বৃস্পতিবার (৯ আগষ্ট ২০১৮) সৌন্দর্যে বিশ্বখ্যাত স্পেনের আলিকান্তে অঞ্চলে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে তৈরি বেনিডরম সমুদ্র সৈকত এ অনুষ্ঠিত হয় সমুদ্র ভ্রমন ও বনভোজন।৫৫১কিলোমিটার দূরের ভ্রমনে প্রবাসীরা আনন্দে দিনটি অতিবাহিত করেন।
রাজধানী মাদ্রিদের গ্লরিয়েতা এম্বাখাদোরেস থেকে সকাল ৬ টায় বাস যোগে রওয়ানা হয়ে প্রায় ৬ ঘন্টা পরে গন্তব্য স্হলে পৌছান। যাত্রার শুরুতে অংশগ্রহণকারী সকলকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান মজুমদার রুবেল। লং জার্নির সময় বাসে মাইক্রফোনের সাহায্যের সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সমিতির অর্থ সম্পাদক আবুল হাসেম মেম্বার।গান, কৌতুক, রম্য ধাঁধা পরিবেশন করে মাতিয়ে রাখেন আবুল হাসেম ও সমিতির উপদেষ্টা মুরাদ মজুমদার ও বশির আহমদ।
যাত্রার শুরুতে সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি মাহবুবুল আলম শিপন তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অংশ গ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রবাসী কুমিল্লা বাসীর মধ্যে সেতু বন্ধনের উদ্দেশ্যে এই সুন্দর আয়োজন।সভাপতি আনিসুর রহমান মজুমদার রুবেল প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে আমাদের কৃষ্টি কালচারের সাথে পরিচয় করানোর গুরুত্বারোপ করেন এবং দেশ ও প্রবাসে কুমিল্লা বাসীর কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।এছাড়া সমিতির বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মাসুম ,উপদেষ্টা মোখলেসুর রহমান।
প্রবাসে ব্যাস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করে প্রশান্তি নিতে এই সমুদ্র ভ্রমন ও বনভোজনে উপস্থিত হয়েছিলেন দলমত নির্বিশেষে বহু প্রবাসীরা।এতে অনেক মহিলা এবং শিশুরাও অংশ নেন। যাদের সরব উপস্থিতিতে এই মিলন মেলা মুখরিত হয়ে ওঠে, তারা হলেন স্পেন বাংলা প্রেসক্লাব এর সদস্য কবির আল মাহমুদ,ব্যাবসায়ী নাহিদ আনোয়ারুল ,সমিতির উপদেষ্টা লন্ডন প্রবাসী মোখলেসুর রহমান ,সিনিয়র সহ সভাপতি মাহবুবুল আলম শিপন ,মহিলা সম্পাদিকা মাকসুদা আক্তার ,প্রচার সম্পাদক বশির আহমদ ,ইউসুফ মোহাম্মদ ,মোঃ জাহিদ ,মোঃ শিপন প্রমুখ।
উল্লেখ্য ইউরোপের মাটিতে জীবনের প্রয়োজনে বসবাস করলেও মন কাধেঁ সর্বদা জন্মভুমি বাংলাদেশের মা,মাটি ও মানুষের জন্য। ভ্রমন পিপাসু অংশগ্রহণকারীরা সমুদ্র সৈকতে দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করেন। হরেক পদের মুখরোচক বাংগালী খাবার খেয়ে সবাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে থাকেন। যারা রান্না করেছেন, তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে ধন্যবাদ জানান। খাওয়া শেষে অনেকেই আনন্দ মনে মুঠোফোনের সাহায্যে বারবার “সেলফী ” তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন।
এরপর শুরু হয় লবনাক্ত পানিতে সাতার কাটা, হৈ হুল্লোড়, হ্যান্ডবল খেলা, ফুটবল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী সমুদ্র সৈকত ভ্রমন ও বনভোজনের আনন্দ উপভোগ করতে করতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। প্রবাসীরা যখন সুখের দোলায় উক্ত মনোরম স্থান ত্যাগ করেন তখন সুর্য প্রায় হেলে পড়েছে সাগর পাড়ে। সুর্যাস্তের এই দৃশ্য খুবই চমৎকার। ঘর ফেরার সমবেত স্বরে উচ্ছারিত হয়েছিল “সূর্যদয়ে তুমি সূর্যোস্তে ও তুমি ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় জন্ম ভূমি।”