Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কোটি টাকায় খুনি ভাড়া করে জামাইকে হত্যা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:১৯ PM
আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:১৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে গত শুক্রবার প্রকাশ্যে এক প্রকৌশলীকে হত্যা করা হয়েছে কোটি টাকার চুক্তিতে। ছোট জাত বলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন জামাইকে মানতে পারেনি। তাই হত্যার পরিকল্পনা।নালগোন্ডা অনার কিলিংয়ে সুপারি দেওয়া হয়েছিল এক কোটি টাকা! আগাম দেওয়া হয়েছিল ৫০ লাখ। ভাড়াটে খুনি দিয়ে নিজের জামাইকে হত্যার ছক কষেছিল অম্রুতাবর্ষিণীর বাবা টি মারুথি রাও।

সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া ভাড়াটে খুনি সুভাষ শর্মাকে বিহার থেকে গ্রেফতারের পর এই বিস্ফোরক দাবি করেছে তেলঙ্গানা পুলিশ।

খুনের জন্য ওই ব্যক্তিদের কোটি রুপিতে ভাড়া করা হয়েছিল। ঘটনার মূল হোতা ২০০৩ সালে গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হারেন পান্ডিয়া হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছিলেন। তবে পরে তিনি ওই অভিযোগ থেকে মুক্তি পান।

তেলেঙ্গানা পুলিশ জানায়, গ্রেফতার ব্যক্তিদের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থারও (আইএসআই) যোগাযোগ রয়েছে।

ঘটনার দিন তেলেঙ্গানার নালগোন্দায় ঘটে ওই হত্যাকাণ্ড। সেদিন প্রকাশ্যে রাস্তার ওপর চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তরুণ প্রকৌশলী প্রণয় কুমারকে (২৩)। ঘটনার সময় প্রণয়ের স্ত্রী অমরুথাভারসানি রাও (২২) উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কিছু বোঝার আগেই প্রণয়কে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যান হত্যাকারী।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্ত্রীর বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, মূলত বর্ণবাদ থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পুলিশের বলছে, মেয়ের বাবাই এক কোটি রুপিতে খুনিদের ভাড়া করেছিলেন, যার ১৮ লাখ রুপি পরিশোধও করা হয়। ইতিমধ্যে মেয়ের বাবা ও এক চাচাকেও এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রণয় কুমার ও অমরুথাভারসানি রাও গত জানুয়ারিতে গোপনে বিয়ে করেন। কারণ, অমরুথাভারসানির পরিবার কোনোভাবেই তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি।

অমরুথার ভাষ্য, প্রণয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক নষ্ট করতে তার বাবা-চাচা অনেক চেষ্টাই করেন। তারাই প্রণয়কে হত্যা করিয়েছেন। ঘটনার দিন প্রণয় অমরুথাকে চিকিৎসক দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে সবেমাত্র বের হন। এরপরই পেছন থেকে রামদা হাতে এক ব্যক্তি এসে প্রণয়ের মাথায় আঘাত করেন।

এ সময় তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে আরও কয়েকটি আঘাত করে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যান। তবে পুরো ঘটনাটাই তেলেঙ্গানার ওই হাসপাতালের পাশে থাকা একটি ভবনের সিসিটিভিতে ধরা পড়ে।

এনডিটিভি পুলিশ ও অমরুথার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অসম বর্ণের এ দুই তরুণ-তরুণী স্কুলজীবন থেকেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

অমরুথার আবাসন ব্যবসায়ী বাবা মারুথি রাও তেলেঙ্গানার ওই অঞ্চলের শীর্ষ ধনী ও অতি প্রভাবশালী ব্যক্তি। এর ফলে তিনি কোনোভাবেই মেয়ের এই সম্পর্ককে মেনে নেননি। অবশ্য প্রণয়ের পরিবার ছেলের এ সম্পর্ককে মেনে নেয়।

জানুয়ারিতে বিয়ে করা এই দম্পতিকে মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে মেনে নেয় প্রণয়ের পরিবার। এরপর থেকে আরও তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠতে শুরু করে অমরুথার পরিবার।

মরুথা এনডিটিভিকে বলেন, ‘বাবা আমাকে গর্ভপাত করতে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আমি কোনোভাবেই এটা করতে চাইছিলাম না। কারণ, প্রণয়ের সন্তানই আমার ভবিষ্যৎ। মানুষ হিসেবে প্রণয় খুব ভালো ছিল। সে আমাকে আন্তরিকতার সঙ্গে দেখাশোনা করত, বিশেষ করে গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব কথা বলতে গিয়ে ২২ বছর বয়সী এই তরুণী অঝোরে কাঁদতে থাকেন।

অমরুথা আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে বাবা ও চাচা শ্রাবণ রাও মূল পরিকল্পনাকারী। অমরুথা তার বাবার সম্পদের উৎস তদন্ত করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, তার বাবার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর উপরস্থ অনেক ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

Bootstrap Image Preview