Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভরতখালী ও বোনারপাড়া রেলের জমি পুনঃউদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান

মোস্তাফিজুর রহমান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:১০ AM
আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:১০ AM

bdmorning Image Preview


গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ও বোনারপাড়া রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা মূল্যের ভূ-সম্পত্তি প্রতিযোগিতামূলক ভাবে দখল করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে রেলওয়ের জমিসহ সম্পদ অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে যাচ্ছে।   

জানাগেছে, বোনারপাড়া রেলওয়ে জংশন এলাকার ১শ' ৩০ একর জমি রয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব জমি প্রতিযোগিতামূলক দখল করছে। রেলকলোনিতে ৩শ' ৩টি স্টাফ ইউনিট কোয়ার্টারের মধ্যে ২শ জন কর্মচারী বসবাস করছেন। বাকি কোয়ার্টারগুলো প্রভাবশালিরা দখল করে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্যসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। 

দখল হওয়া  এলাকাগুলো হচ্ছে,  বোনারপাড়া রেল স্টেশন চত্বর, লাইনের ওপর সেখানে গড়ে তুলেছে দুটি প্রতিষ্ঠান। পূর্বে কলেজ রোডের ধারে, বিশাল পুকুরটিসহ বাজার এলাকা, নতুন ওভারব্রীজ রোড, আইডব্লিউ আই অফিস রোড, রেল কলোনি সংলগ্ন বানমারি মাঠ ঘুমটি এলাকা, ফুটানি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা দখল করে ভূ-সম্পত্তি দখলকারিরা বসবাস ও ভাড়া প্রদান করেছে। অনেকে রেলকোয়াটারের অদুরে নিজের বাড়ি ভাড়া দিয়ে কোয়াটারে বসবাস করছেন। 

এছাড়া পরিত্যক্ত রেল স্টেশন ভরতখালীর অবস্থা আরো ভয়াবহ। রেলস্টেশন এলাকায় বহু মূল্যবান জমি অবৈধভাবে দখল করে বাড়িঘড়সহ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে কিছু ব্যক্তি টাকার পাহাড় গড়ছে। অথচ এ খাতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। অনেকে রেলের এস্টেট বিভাগ থেকে লিজ নিলেও সেখানে রয়েছে তেলেসমাতি কারবার। কাগজ কলমে যে পরিমাণ জমি লিজ নেয়া হয়েছে তার দ্বিগুণ এবং চতুরগুণ ভোগ দখল করার নজির রয়েছে।

কৃষি জমি লীজ নিয়ে গোড়ে তোলা হয়েছে ঘড়-বাড়ি। গুরুত্বপূর্ণ রেল এলাকায় বাণিজ্যিক জমির সঠিক পরিমাণ নির্ণয় করে নিয়মমাফিক ভাড়া আদায় করা হলে রেলওয়ে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। রেলওয়ের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে রেলের কৃষি জমি ও মৎস্য জমি ক্ষেএেও একই অবস্থা বিদ্যমান।

বর্তমানে কি পরিমাণ জমি অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে গেছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান এস্টেট বিভাগের কাছে নেই বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। পরিত্যক্ত রেল ওয়াগনসহ অন্যান্য রেল সম্পদের ক্ষেএে একই অবস্থা বিদ্যমান কোয়ার্টারগুলোর অধিকাংশই অবৈধ দখলদারদের দখলে থাকায় কোয়ার্টার ভাড়া বাবদ প্রাপ্তি থেকে রেল বিভাগ মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অবৈধভাবে কোয়ার্টার দখলকারীরা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে বিদ্যুৎ খরচের প্রায় ৪০ ভাগ খরচ করলেও বিদ্যুৎ বিল বাবদ সমুদয় অর্থ রেল বিভাগকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। 

বোনারপাড়া রেলওয়ের আইডব্লিউ আই এর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, স্থানীয়ভাবে বহুদিন ধরে এসব জমি বেদখল হয়েছে। 

এদিকে গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ভরতখালী ও বোনারপাড়া জংশন স্টেশন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার ও সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ সুজাউদ্দৈীলা ও মীর আমীর হামজা সহাকারী কমিশনার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গাইবান্ধা সহ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

এতে স্টেশন চত্বরের পূর্ব পার্শ্বে লাইনের ওপর দুটি প্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় শতাধিক অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানের সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, জায়গাটিতে ফসলি জমি হিসেবে স্থানীয়দের ইজারা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে ওই জমিতে হঠাৎ করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে অবৈধ দখলদারদের কয়েকবার নোটিশ ও ওই এলাকায় মাইকিং করে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়। তারপরও তারা স্থাপনা না সরালে আজ ওই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

Bootstrap Image Preview