Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মাদরাসায় রক্তমাখা মশারীর পাশে জোড়া লাশ

ক্রাইম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৬ PM
আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৬ PM

bdmorning Image Preview


ভিড় জমেছে শত শত জনতার, সকলেই চেষ্টা করছেন রহস্য ভেদ করার। রহস্য সৃষ্টির উৎস হচ্ছে মাদরাসার কক্ষে রক্তমাখা মশারীর পাশে পড়ে থাকা জোড়া লাশ। ঘটনাটি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা এলাকায় ‘হুফ্ফাজুল কুরআন’ নামের একটি মাদরাসার।

আজ মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা দা, বটি, বিছানার চাদর, রক্তমাখা মশারী উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন, ‘হুফ্ফাজুল কুরআন’ মাদরাসার পরিচালক ও শিক্ষকের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার স্মৃতি ও ঐ মাদরাসার সাত বছর বয়সী শিক্ষার্থী মামুন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর ধরে মাদরাসাটি পরিচালনার পাশাপাশি ছাত্রদের কোরআন পড়িয়ে আসছিলেন মাদরাসার পরিচালক ইব্রাহিম খলিল তালুকদার। ওই মাদরাসারই একটি কক্ষে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তিনি। আজ মঙ্গলবার ভোরে ফজর নামাজের সময় মাদরাসার সকল ছাত্রদের নিয়ে পাশের মসজিদে নামাজ পড়তে যায় পরিচালক ইব্রাহিম খলিল। এসময় অজ্ঞাতরা মাদরাসায় ঢুকে পরিচালকের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার ও নুরানী ক্লাসের এক ছাত্র মামুনকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানা পুলিশ পরিচালক ইব্রাহিমের ঘরের ভেতর থেকে মাহমুদার এবং দরজার সামনে থেকে মামুনের লাশ উদ্ধার করে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার বাসন থানার ওসি মুক্তার হোসেন জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদরাসার পরিচালক ইব্রাহিম খলিলকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া মাহমুদার গলায়, গালে ও কানে এবং মামুনের ঘাড়ে, মাথায় ও পিঠে ধারোলো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদরাসা পরিচালক ইবরাহিম খলিল তালুকদার জানান, মাস ছয়েক আগে তার প্রথম স্ত্রীকে তার উশৃঙ্খল আচরণের জন্য তালাক দেয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি অথবা তার ভাইয়েরা এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

মাদরাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের মাদরাসায় ১২শিক্ষার্থী হেফজ বিভাগে পড়াশুনা করছেন। আমরা এক সঙ্গেই ঘুমিয়েছি। ভোরে নামাজ পড়তে গেছি, নামাজ শেষে এক ছাত্রের কাছে হত্যার ঘটনা জানতে পেরে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এসময় আমরা মাদরাসার রুমের সামনে মামুনের গলাকাটা লাশ এবং ভেতরে মাদরাসা পরিচালকের স্ত্রী লাশ দেখতে পাই।

সিআইডির দলটি হত্যার আলামত সংগ্রহ ও মাদরাসা পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তারা পুরো ঘটনাস্থল নিরাপত্তা বেস্টনি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের আলামত জব্দ করছেন।

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের অপরাধ তদন্ত দলের ওসি শহীদুল ইসলাম জানান, জোড়া হত্যাকাণ্ডের পর অপরাধ তদন্ত বিভাগ ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে। এসময় তারা হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা দা, রক্তমাখা বিছানার চাদর, মশারী ও পোশাক আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদরাসার পরিচালক ইব্রাহিম খলিল তালুকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

এই জোড়া খুনের ঘটনার কারণ প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি উল্লেখ করে জিএমপি কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান বলেন, আমরা আশা করছি অচিরেই এ জোড়া খুনের রহস্য জানা যাবে এবং অপরাধীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হব।

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।

Bootstrap Image Preview